শান্তিগঞ্জে হাফ ভাড়ার দ্বন্ধে সুবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের হেনস্তা, সড়ক অবরোধ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ৮:২৫:১৯ অপরাহ্ন
শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি: বাসের হাফ ভাড়া নিয়ে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে বাস কন্ট্রাক্টরের বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বাসে উপস্থিত থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সেখ আব্দুল লতিফ বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করলে তাঁর সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন ওই বাস কন্ট্রাক্টর। সোমবার সকাল সাড়ে ৯ টায় সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
ঝামেলা মিটিয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের (শান্তিগঞ্জস্থ সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট) সামনে বাস থেকে নামার সময় ফের প্রক্টর আব্দুল লতিফকে কটু কথা বলায় তর্কে জড়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী আল নাহিয়ান নূর ও ওই বাস কন্ট্রাক্টর। এসময় উত্তেজিত হয়ে শিক্ষার্থী নাহিয়ানকে বাস কন্ট্রাক্টর ধাক্কা দিলে বাসের জানালার গ্লাসে হাত লেগে রক্তাক্ত হন শিক্ষার্থী নাহিয়ান । ডান হাতে সেলাই দিতে হয় ৮টিরও বেশি।
সহপাঠীর এমন অবস্থা দেখে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের সাথে এমন অসৌজন্যমুলক আচরণে ক্ষোভে ফেটে পড়েন অন্যান্য শিক্ষার্থীরা। সকলেই নেমে পড়েন রাস্তায়। বন্ধ হয়ে যায় সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের সব ধরণের যান চলাচল। দুই পাশে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের।
খবর পেয়ে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আধাঘন্টার প্রচেষ্টায় অবরোধ তুলে নিতে রাজি হন শিক্ষার্থীরা। এরপর সুবিপ্রবির অফিসে আলোচনায় বসে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের কাছে ৬ দফা দাবি জানিয়ে বিকাল ৪টার মধ্যে এই ঘটনার সমাধান চান তারা। না হলে বিকালে আবারো আন্দোলনে নামার হুমকি দেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সেখ আব্দুল লতিফ বলেন, আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। বাসের কন্ট্রাক্টর বেয়াদবি করেছে। ছেলেরা উত্তেজিত হওয়ার পর আমি তাদের নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসার সময় নাহিয়ানের উপর হামলা করে বসে। ছেলেটা মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। এর সুষ্ঠু সমাধান দরকার। আর আমাদের ছেলেমেয়েদের যে দাবিগুলো আছে তা-ও তো যৌক্তিক।
সুবিপ্রবি’র পদার্থ বিজ্ঞানের ডিন অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, এটা অত্যন্ত উদ্বেগের কথা। হাফ পাস চাইলে ছেলেদের উপর হাত তুলতে হবে কেনো। এটা চরম অন্যায় হয়েছে। আশা করছি পরিবহনের নেতারা আজ বিকালের মধ্যেই এর সুষ্ঠু সমাধান করবেন।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা বলেন, সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে আমরা ঘটনাস্থলে চলে এসেছি। শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে রাস্তার অবরোধ আধাঘন্টার ভিতরেই তুলে নেওয়া হয়েছে। বাস কন্ট্রাক্টর যা করেছে তা মোটেও উচিত হয়নি। আমরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানে যাবো আশা করছি।
সুনামগঞ্জ পরিবহন শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নূরুল হক বলেন, আমরা কথা বলেছি। শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি জানিয়েছেন, আমরা তা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে কথা বলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবো। হাফ পাশ নিশ্চিত করা হবে। অভিযুক্ত চালক ও হেল্পারকে খুঁজে বের করে এখানে এনে ক্ষমা চাওয়ানো হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের সাথে যে ঘটনা ঘটেছে তা দুঃখজনক।