দেশে বেড়েছে দারিদ্র
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৩০:১৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: অভূতপূর্ব সফল অভ্যূত্থানে দীর্ঘ শাসনের অবসান হলেও দেশে বেড়েছে দারিদ্র্যের হার। বেড়েছে ধনী অঞ্চল হিসেবে পরিচিত সিলেটেও! সার্বিক দারিদ্রের হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ২ শতাংশে। এর মাঝে গ্রামে কমেছে দারিদ্রের হার, বেড়েছে শহরে।
প্রতিবেদনে দেশজুড়ে বিত্তশালী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিস্তর অর্থনৈতিক বৈষম্যের চিত্র উঠে এসেছে। দেশে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ে সামনে আসা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জগুলোকেও চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রোভাটি ম্যাপ অব বাংলাদেশ ২০২২ এর ফলাফলে এসেছে এমন তথ্য। বৃহস্পতিবার এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
এতে দেখা যায়, গ্রামে দারিদ্র্যতা কমেছে। হাউস হোন্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেনডিচার সার্ভে গ্রামে দারিদ্র্যের হার ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ, যা প্রোভাটি ম্যাপ অব বাংলাদেশ এর সার্ভেতে কমে হয়েছে ২০ দশমিক ৩ শতাংশ। অন্যদিকে শহর এলাকায় দারিদ্র্যতা বেড়েছে ১ দশমিক ৮ শতাংশ। আগে শহরে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ, যা এখন বেড়ে হয়েছে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সন্মেলন কেন্দ্রে প্রভার্টি ম্যাপ প্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), বিশ্বব্যাংক এবং ওয়াল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)।
প্রভার্টি ম্যাপে বলা হয়েছে, দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে বেশি বরিশাল বিভাগে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ; আর সবচেয়ে কম চট্টগ্রাম বিভাগে। সেখানে দারিদ্র্যের হার ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। রংপুরে দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ। রাজশাহীতে ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ, সিলেটে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ, ময়মনসিংহ ২২ দশমিক ৬ শতাংশ, খুলনা ১৭ দশমিক ১ শতাংশ আর ঢাকা বিভাগে দারিদ্র্যের হার ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, দারিদ্র্যতা বেড়েছে সিলেট, রংপুর, খুলনা ও ঢাকা বিভাগে। বরিশালে দারিদ্র্যের হার বেশি হলেও তা আগের ২৬ দশমিক ৯ শতাংশের তুলনায় ০ দশমিক ৩ শতাংশ কমে এখন হয়েছে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ। হাউস হোন্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেনডিচার সার্ভেতে ঢাকার দারিদ্র্যের হার ছিল ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ, যা প্রোভাটি ম্যাপ অব বাংলাদেশ ২০২২ সার্ভেতে বেড়ে হয়েছে ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ।
দারিদ্র্য ম্যাপে আরো দেখা যায়, দেশের সবচেয়ে দরিদ্র উপজেলা মাদারীপুরের দাসার উপজেলা ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১০ সালের সার্ভেতে এ উপজেলার দারিদ্র্যের হার ছিল ৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম দারিদ্র্য নোয়াখালী জেলায় ৬ দশমিক ১ শতাংশ।
ক্রয়ক্ষমতা সমতার ভিত্তিতে নির্ধারিত আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমা হলো দৈনিক আয় ২৫৮ টাকা (১ ডলার ১২০ টাকা ধরে) বা ২.১৫ ডলার। অর্থাৎ, দৈনিক ২.১৫ ডলারের কম আয় করা মানুষ দরিদ্র বলে গণ্য হবেন।
এর আগে গত ১৫ জানুয়ারী চলতি বছর (২০২৫) বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ৫টি বড় ঝুঁকি চিহ্নিত করেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো মূল্যস্ফীতি। প্রকাশিত ডব্লিউইএফের বৈশ্বিক ঝুঁকি প্রতিবেদন ২০২৫–এ এমন তথ্য উঠে এসেছে। এতে শঙ্কা দেখা দিয়েছে এ বছর দারিদ্রতা আরো বাড়তে পারে।