জলাশয় শুকিয়ে মাছ নিধনে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৭:০০:০৫ অপরাহ্ন
জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা: হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় উন্মুক্ত ও ইজারা নেওয়া জলাশয় শুকিয়ে অবাধে মাছ নিধন করা হচ্ছে। মৎস্য আহরণে ইজারা নীতিমালা ও মৎস্য আইনের প্রয়োগ না থাকায় জলাশয় শুকিয়ে অবাধে চলছে মাছ নিধন। সেচে শুকিয়ে নির্বিচারে মাছ ধরার ফলে ক্রমশই হাওর খাল-বিলে বিলুপ্ত হচ্ছে চিরচেনা টেংরা, শিং, মাগুর, কই, পাবদা, লাচু, শোল, গজারসহ নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ।
হাওর এলাকার অনেক পরিবার মৎস্য আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। উন্মুক্ত জলাশয়ে দেশীয় মাছের উৎপাদন কম থাকায় এসব মৎস্য আহরণের উপর নির্ভর মানুষগুলো বিপাকে পড়েছেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, চলতি মৎস্য আহরণ মৌসুমে খাল-বিল, ডোবা সেচে মাছ ধরার মহোৎসব চলছে। হাওর এলাকার স্থানীয়রা জানান, সেচ মেশিন দিয়ে শুকিয়ে মাছ ধরা হলেও মৎস্য আইন অনুযায়ী কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়না। মৎস্য নীতিমালা থাকলেও বাস্তবে এসব আইনের প্রয়োগ না থাকায় দেশীয় প্রজাতির মাছসহ ধ্বংস করা হচ্ছে জলজ জীববৈচিত্র্য।
জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামের আবু তাহের বলেন, আমাদের এলাকায় সেচ মেশিন দিয়ে খালবিলের পানি শুকিয়ে মাছ ধরা হয়। আগের সময়গুলোতে সেচ দিয়ে মাছ ধরা হতোনা, বাজারে সস্তায় কই, মাগুর, শউল মাছ পাওয়া যেতো। বাজারে দেশী মাছের চাহিদা বেশি, অনেক বেশি দামে দেশি মাছ কিনতে হয়। জলমহাল না শুকালে দেশী মাছের উৎপাদন বেশি হতো। সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের আক্তার মিয়া বলেন, বাজারে শুধু দীঘির উৎপাদিত মাছ পাওয়া যায়। এসব হাইব্রিড মাছে স্বাদ পাওয়া যায়না। চারপাশে মেশিনের শব্দ, খাল-বিলের পানি শুকিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে, আইনের নিয়মনীতি কেউ মানেনা।
জগন্নাথপুর উপজেলা মৎস্য অফিসার আল-আমীন বলেন, হাওরে নিম্নোঞ্চল ইজারা নিয়ে ডোবা, বিল সেচ দিয়ে শুকিয়ে মাছ ধরা হয়ে থাকে। এটা আমাদের মৎস্য আইনের পরিপন্থি কাজ। মৎস্য সুরক্ষা এবং মৎস্য সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী সরকারি জলাশয় কিংবা উন্মুক্ত জলাশয় হউক সম্পুর্ণভাবে সেচে অথবা বিষ প্রয়োগ করে এখান থেকে মাছ ধরা যাবেনা। সেচযন্ত্র দিয়ে যদি কেউ এই ধরনের কাজ করেন তাহলে আমাদের আইন অনুযায়ী এখানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে পারি।