আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৭:৪২:৪৯ অপরাহ্ন
বড়লেখা প্রতিনিধি : বড়লেখায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নালিশী ভূমিতে ঘরের সংস্কার কাজের অভিযোগ ওঠেছে প্রভাবশালী তৈয়বুর রহমান গংদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি উপজেলার মোহাম্মদনগর এলাকার। মৌলভীবাজার যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতের কমিশনারের পরিদর্শনকালে গত ২৬ জানুয়ারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নালিশী ভূমির বাড়ি ও ঘরে সংস্কার (রক্ষণাবেক্ষণ) কাজের প্রমাণ মিলেছে।
সরেজমিনে ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মোহাম্মদনগর এলাকার মো. আজিজুর রহমান ও তার পরিবারের ক্রয়সূত্রে মালিকানাধীন ৮ শতাংশ ভূমি ২০২৩ সালের ৭ জুলাই রাতের আঁধারে জোরপূর্বক দখল করেন একই এলাকার বাসিন্দা তৈয়বুর রহমান গং। এরপর তৈয়বুর রহমান গংরা দখলে নেওয়া টিলা শ্রেণির ভূমির মাটি অবৈধভাবে কেটে ঘর নির্মাণসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেন। নিজেদের জমিতে ঘর নির্মাণের খবর পেয়ে আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে আপত্তি জানান। তবে প্রভাবশালী তৈয়বুর রহমানের লোকজন আজিজুর রহমানকে হত্যার হুমকি দিয়ে তার লোকজন দিয়ে জায়গা থেকে তাড়িয়ে দেন। প্রতিকার চাইতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে বিচারপ্রার্থী হন আজিজুর রহমান।
স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ-বৈঠকে আজিজুর রহমানের পক্ষে সিদ্ধান্ত আসে এবং তৈয়বুর রহমান গংদের দখলে নেওয়া জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু তারা এ সিদ্ধান্ত না মেনে জায়গা জোরপূর্বক দখলে রাখেন। এ অবস্থায় ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট মৌলভীবাজার যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে স্বত্ব মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী আজিজুর রহমান। এতে মোহাম্মদনগর এলাকার আরব আলীর ছেলে তৈয়বুর রহমান, আব্দুল খালিক, মুহিবুর রহমান, আব্দুর নুরের ছেলে ফয়ছল আহমদ ও রেদওয়ান আহমদ আব্বাস, মুহিবুর রহমানের ছেলে আব্দুর রহিম ও আব্দুস শুক্কুরকে বিবাদী করা হয়।
মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট নালিশী ভূমিতে স্থিতাবস্থা এবং বিবাদীদের কারণ দর্শানোর আদেশ দেন। কিন্তু বিবাদী তৈয়বুর রহমান গং-রা আদালতের স্থিতাবস্থার আদেশ উপেক্ষা করে নালিশী ভূমি পাকা ঘরসহ স্থাপনা নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ২৫ এপ্রিল আদালত সরেজমিনে স্থিতাবস্থা কার্যকরের জন্য বড়লেখা থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। আদালতের স্থিতাবস্থার আদেশের পরও তৈয়বুর রহমান গংরা ঘর নির্মাণের পর রক্ষণাবেক্ষণ, নতুন স্থাপনা নির্মাণকাজ অব্যাহত রাখেন। সর্বশেষ গত ৮ জানুয়ারি নালিশী ভূমির বাস্তব অবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শনপূর্বক আদালতের দৃষ্টিতে আনার জন্য একজন আইনজীবীকে কমিশনার নিয়োগের আবেদন করেন মামলার বাদী মো. আজিজুর রহমান। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে মৌলভীবাজার যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালত গত ২১ জানুয়ারি অ্যাডভোকেট নিপা আক্তারকে কমিশনার নিয়োগ করেন।
আদালতের আদেশে ২৬ জানুয়ারি কমিশনার অ্যাডভোকেট নিপা আক্তার সরেজমিনে নালিশী ভূমি পরিদর্শন করেন। এসময় অ্যাডভোকেট মাজহারুল ইসলাম ছাড়াও বাদী পক্ষের অ্যাডভোকেট বিকাশ চন্দ্র দে, বিবাদী পক্ষের অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম রুহেল উপস্থিত ছিলেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আদালতের নিষেধাজ্ঞার আদেশ উপেক্ষা করে বিবাদী তৈয়বুর রহমান গংরা নালিশী ভূমিতে নির্মিত পাকা ঘরের রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করছেন। বাদীপক্ষের অ্যাডভোকেট বিকাশ চন্দ্র দে বলেন, বিবাদী পক্ষ স্বত্ত্ব মামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত দখলে নেওয়া ভূমির পক্ষে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেন-নি। এরমধ্যে আদালতের স্থিতাবস্থার নিষেধাজ্ঞা বারবার উপক্ষো করে ঘর নির্মাণ ছাড়াও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করছেন। সম্প্রতি কমিশনারের পরিদর্শনে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপক্ষোর প্রমাণ মিলেছে।