বিচারপতি আবদুর রউফের ইন্তোকাল কাল দাফন, শোক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৯:০০:২৯ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও বিচারপতি মোহাম্মাদ আবদুর রউফ ইন্তেকাল করেছেন। রোববার সকাল ১০টার দিকে তিনি ইন্তেকাল করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। তিনি রাজধানীর মগবাজারে ইনসাফ বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে আইসিওতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে, এক মেয়ে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
রোববার বাদ আসর রাজধানীর মহাখালীর টিবি হাসপাতাল গেট সংলগ্ন গাউছুল আজম জামে মসজিদে মরহুমের প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। কাল সোমবার বাদ জোহর জাতীয় ঈদগাহে দ্বিতীয় জানাজা এবং ময়মনসিংহের দাপুনিয়া হাইস্কুলে মাঠে বাদ মাগরিব তৃতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
তিনি দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় সমন্বয়ক কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এরআগে সাবেক এই বিচারপতি ১৯৯০ সালের ২৫ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৯৫ সালের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং ১৯৯৫ সালের জুনে আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৯৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তিনি অবসরে যান।
প্রধান উপদেষ্টার শোক: বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
গণ-আন্দোলনের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরশাসক এরশাদের পতনের পর ওই বছরের ২৫ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব গ্রহণ করে দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফেরাতে বিচারপতি রউফের অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশর গণতান্ত্রিক পথচলার ক্ষেত্রে বিচারপতি রউফ বার বার উদাহরণ হয়ে আসবেন। তিনি তার কাজের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের অন্তরে বেঁচে থাকবেন চিরকাল।’ প্রফেসর ইউনূস আরও বলেন, ‘বিচারপতি রউফ ছিলেন নাগরিক সমাজের একজন বড় স্তম্ভ। ভোটাধিকার, সংস্কার এবং গণতন্ত্রের জন্য তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন যা জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।’
জামায়াত আমীরের শোক: অপরদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এক শোক বাণীতে তিনি মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
শোক বাণীতে তিনি বলেন, বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুর রউফ ১৯৯০ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি দুর্নীতি বিরোধী জাতীয় সমন্বয়ক কমিটির চেয়ারম্যান এবং জাতীয় শিশু সংগঠন ফুলকুঁড়ির সভাপতিসহ অনেক জনহিতকর দায়িত্ব পালন করছিলেন। ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, আইন ও আদালত অঙ্গনে তার দীর্ঘ আইনগত পেশা জীবনে তিনি পেশাদারিত্ব, স্বচ্ছতা ও দায়িত্ববোধের যে উদাহরণ স্থাপন করেছেন- তা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
মোহাম্মদ আবদুর রউফ প্রধান নির্বাচন কমিশনার থাকাকালে ১৯৯১ সালে জাতিকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিয়েছিলেন। যে নির্বাচন দেশ-বিদেশে সকলের নিকট গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিলো। তার নিরপেক্ষতা, সততা ও যোগ্যতা ছিল প্রশ্নাতীত।