ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন : মীর্জা ফখরুল
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৭:৫১:০৬ অপরাহ্ন
অভিন্ন সুর ইসির, ভিন্ন সুর সজিবের
জালালাবাদ রিপোর্ট :
অতি সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, ২০২৫ এর শেষে কিংবা ২০২৬ এর মাঝমাঝি জাতীয় নির্বাচন করতে চায় সরকার। এবার তাঁর সে বক্তব্য আরো স্পষ্ট হলো। জানা গেলো, ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সোমবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ইউনুসের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে দুপুরে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকারও অভিন্ন সুরে বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে যাতে জাতীয় নির্বাচন হয়, সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। দেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন মহলের সহায়তা দরকার।
তবে ভিন্ন সুর দেখা গেছে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার। একই দিন দুপুরে ঢাকার নগর ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে বলেন, সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনার মধ্যে আগে আলোচনায় আসে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। তাই এ নিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, দেশের চলমান পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রায় দেড় ঘন্টাব্যাপী বৈঠক করে বিএনপির প্রতিনিধি দল। সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পৌঁছায় বিএনপি নেতাদের গাড়ি। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় ছিলেন আরো ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সঙ্গে যারা আছেন তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, অতি দ্রুত তারা নির্বাচনের ব্যবস্থা করছেন। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেনও- ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা করার জন্য কাজ করছেন। আমরা আশা করব, জনগণের যে প্রত্যাশা আছে, একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন তিনি। সেটার মধ্য দিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা খুব পরিষ্কার করে আগেও বলেছি, এখনও বলছি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে না। আমরা এ ব্যাপারে কোন কোনভাবেই একমত হবো না।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি প্রতিনিধি দল দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সাথে আলোচনা করেন। এছাড়া ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ সারাদেশে ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে বিএনপি তার দলীয় অবস্থান তুলে ধরেন। সরকারের সহযোগিতার পাশাপাশি দ্রুত নির্বাচনের কথাও তুলে ধরেন। এজন্য দলটির পক্ষ থেকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ জানতে চান বিএনপি নেতারা।
ফখরুল বলেন, এই যে ঘটনাগুলো ঘটেছে এর দায় সরকার এড়াতে পারে না। সরকারি বিভিন্ন বাহিনীগুলোর সামনেই এই ঘটনা একটার পর একটা ঘটেছে। আমরা মনে করি এই কারণে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিপন্ন হয়েছে। ফ্যাসিবাদকে সুযোগ করে দিয়েছে এসব বিষয়ে কথা বলার। আমরা বারবার বলে আসছি এটা অন্তর্বর্তী সরকার। দ্রুত নির্বাচনের জন্য আমরা আবারও তাদের তাগাদা দিয়েছি। ন্যূনতম যেসব সংস্কার করা দরকার সেটুকু করে আমরা নির্বাচন দেওয়ার কথা বলেছি।
তিনি বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এখনো প্রশাসনে যেসব ফ্যাসিবাদের দোসররা রয়েছে, যারা লুটপাটে সহযোগিতা করেছে, যারা হত্যায় সহযোগিতা করেছে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছি।
ফখরুল বলেন, গত ১৫ থেকে ১৬ বছরে যেসব মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হয়েছে সেসব মামলা প্রত্যাহারের কথা আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি। এ বিষয়ে তারা নীতিগত সিদ্ধান্তে একমত হয়েছেন।
এর আগে রোববার বিকালে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএস নাসির উদ্দিনসহ অন্য কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। ওই আলোচনায় ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও সেলিমা রহমান।