অনির্বাণ এই ফেব্রুয়ারী
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৪০:৪১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : যেকোনো জাতির সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যম ভাষা। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বাহনও ভাষা। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই পাকিস্তানের শাসক শ্রেণী নিরীহ বাঙালির প্রতি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এমনকি সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও আঘাত শুরু করে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ঐতিহ্য নস্যাৎ করার অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়। যার প্রেক্ষাপটে শুরু হয় ভাষা আন্দোলন। প্রাণের ভাষা বাংলার অস্তিত্ব ও অন্যতম রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে তুমুল আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয় বাঙালি। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিবর্ষণে প্রাণ হারান সালাম, বরকত, রফিকসহ নাম না জানা অনেকেই। এ আত্মত্যাগে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ল বিদ্রোহের আগুন। পরবর্তীতে নানা ঘাত-প্রতিঘাত, আন্দোলন সংগ্রামের পর বাংলা ভাষা পায় পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা। একুশে ফেব্রুয়ারি পৃথিবীতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পেয়েছে স্বীকৃতি।
এত রক্তের বিনিময়ে পাওয়া বাংলা ভাষার ব্যবহার ও চর্চা সম্পর্কে এখনো তরুণ প্রজন্ম সচেতন নয়। ইংরেজি ভাষায় কথা বলার চর্চা বাড়ছে। অনেকে ইংরেজি বলাকে স্মার্টনেস মনে করেন। শুধু মূল্যবোধের অভাবে বাংলা ভাষা তার নিজস্বতা হারাচ্ছে। একটি দেশের প্রত্যেক নাগরিকের তার নিজস্ব ইতিহাস জানা প্রয়োজন।
নিজের দেশের ভাষাকে সম্মান করতে না পারলে কেউ অন্য দেশের ভাষাকে সম্মান করতে পারবেন না। শ্রদ্ধা করতে পারবেন না। ইতিহাস থেকেই মানুষ শিক্ষা নেয়। তরুণ প্রজন্ম যদি আধুনিকতার নামে শেকড়কে অগ্রাহ্য করে, তবে নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে। সাবলীল ব্যবহারের মধ্যদিয়ে ব্যক্তিকেন্দ্রিক সদিচ্ছা আর সচেতনতাই পারে এ গৌরবের ভাষাকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম টিকিয়ে রাখতে। একুশের চেতনা বুকে ধারন করে এগিয়ে যাক নতুন প্রজন্ম।