কক্সবাজার বিমানঘাঁটিতে দুর্বৃত্তদের হামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৮:৫৮:০২ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: কক্সবাজারে বিমান ঘাঁটিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর। আইএসপিআর জানায়, বিমানবাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজার-সংলগ্ন সমিতি পাড়ার কিছু দুর্বৃত্ত বিমানবাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজারের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলেও জানিয়েছে আইএসপিআর।
আইএসপিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সোমবার সকালে বিমান বাহিনীর চেকপোস্টে একটি মোটরসাইকেল আটক করা হয়, যেটির কাগজপত্র ছিল না। এতে ওই ব্যক্তি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে নেওয়া হলে, স্থানীয় সমিতিপাড়া এলাকার প্রায় ২০০ জনের মতো লোকজন চেকপোস্টে এসে বাধা দেয়। পরে তাদের সঙ্গে বিমান বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ সময় কিছু দুর্বৃত্ত বিমান বাহিনীর সদস্যদের ওপর ইট পাটকেল ছুড়ে মারে। এতে বাহিনীর চার সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় একজন স্থানীয় যুবক শিহাব কবির নাহিদ গুরুতর আহত হন এবং পরে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
আইএসপিআরের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বিমান বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ফাঁকা গুলি ছোড়েন, তবে কোনো ধরনের তাজা গুলি ব্যবহার হয়নি। এতে স্থানীয় জনগণের উপর গুলি করা হয়নি। তবে, সংঘর্ষের সময় বিমান বাহিনীর গাড়ির কাঁচ ভেঙে যায় এবং স্থানীয়রা ঝোপঝাড়ে আগুন ধরানোর চেষ্টা করে, যা পরে নিয়ন্ত্রণে আসে। আইএসপিআর আরও জানিয়েছে, কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে যে, যুবকটি বিমান বাহিনীর গুলিতে মারা গেছে। কিন্তু তদন্ত করে দেখা গেছে, গুলির খোসা ফাঁকা ছিল এবং প্রাণঘাতী কিছু হয়নি। বিমান বাহিনী এই ঘটনার জন্য শোক প্রকাশ করেছে এবং নিহত যুবকের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছে।
এছাড়া, কিছু অনলাইন পোর্টাল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কক্সবাজারের বিমান বাহিনী ঘাঁটিকে ‘বিমান বাহিনী ঘাঁটি শেখ হাসিনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে, যা ভুল। ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর একটি সরকারি প্রজ্ঞাপনে এর নাম পরিবর্তন করে ‘বিমান বাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজার’ রাখা হয়েছে, যা এখনো বহাল রয়েছে।
তবে স্থানীয়রা দাবি করেন, বিমান বাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজার সংলগ্ন সমিতি পাড়ায় উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় এ হামলা চালানো হয়। এতে একজন নিহত হওয়ার তথ্যও পাওয়া গেছে। নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও সদর হাসপাতাল পুলিশের ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ ঘটনায় একজন নিহত ও আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতাল পুলিশের ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম জানান, নিহতের নাম শিহাব। তিনি পৌর ১নং ওয়ার্ডের সমিতিপাড়ার নাছির উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় বাসিন্দা কবির বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কুতুবদিয়া পাড়া বাসিন্দাদের উচ্ছেদের চেষ্টা করা হচ্ছিল। এ নিয়ে এলাকাবাসী কয়েক দফায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধনও করেছেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। আজ ওই একই ঘটনায় সংঘর্ষ হলো।