সরকারি ক্রয় খাত জিম্মি অবস্থায় রয়েছে : টিআইবি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৯:০৩:১৪ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: আওয়ামী লীগ আমলে অনলাইনে সরকারি কেনাকাটায় দুর্নীতি কমাতে ইজিপি ব্যবস্থা চালু হলেও একযুগ ধরে উল্টো চিত্র। ঠিকাদারদের যোগসাজশ ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে জিম্মি সরকারি ক্রয় খাত। এমন চিত্র উঠে এসেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) গবেষণায়।
মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশে সরকারি ই-কেনাকাটায় বাজার দখল, যোগসাজশ এবং রাজনৈতিক প্রভাব’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই ক্রয় খাত সবচেয়ে দুর্নীতিপ্রবণ খাত। তবে সব দেশেই সেটি নিয়ন্ত্রণ হয়। কিন্তু আমাদের দেশে নিয়ন্ত্রণ হয় না, বরং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছি আমরা।
২০১২ সালে কেনাকাটায় দুর্নীতি কমাতে চালু হয় ভার্চুয়াল কার্যক্রম ই-জিপি বা ই-টেন্ডার। টিআইবির গবেষণা বলছে, কিন্তু আদতে দুর্নীতি কমাতে পারেনি এ উদ্যোগ।
টিআইবি বলছে, ২০১২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ই-টেন্ডারে যত কেনাকাটা হয়েছে তার ৯২ শতাংশই করেছে মাত্র ১০টি মন্ত্রণালয়। হাতেগোনা কয়েকজনই ঘুরেফিরে পেয়েছেন কাজ। কখনও একক নামে, কখনও যৌথ মূলধনি প্রতিষ্ঠান খুলে কাজ বাগিয়ে নেওয়া হতো।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ক্রয় প্রক্রিয়ায় জড়িত কর্মকর্তাদের একাংশ, অন্যদিক থেকে যারা ঠিকাদার এবং কর্তৃপক্ষের আঁতাতের মাধ্যমে যা হয় সেটিই আরও ডিজিটালাইজডওয়েতে আরও বেশি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক জানান, সরকারি ক্রয় খাতকে জিম্মি করা হয়। দুর্নীতি কমাতে ই-জিপি চালুর কথা বলা হলেও উল্টো প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় দখলদারিত্ব। তিনি বলেন, সরকারি ক্রয় খাত একটা নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় জিম্মিদশায় আছে। আজকের প্রেক্ষিতে যে বার্তাটি আমরা দিতে চাই, সেটা হচ্ছে যখন হাতবদল হয় তখন ঠিকই নিয়ন্ত্রণ অব্যাহত থাকে।
তিনি বলেন, ২০১১ সালে ই-জিপি চালুর পর থেকে এ ব্যবস্থার মাধ্যমে ৫ লাখ ৯৬ হাজার ৯২১ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প কাজ দেওয়া হয়েছে। এতে সর্বোচ্চ অনুমোদিত চুক্তির মূল্য ছিলো ৮৮১ কোটি টাকা। এর চেয়ে বড় চুক্তিমূল্যের কাজকে এখনও এই প্ল্যাটফর্মের আওতায় আনা হয়নি।
শীর্ষ ১০ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ ৫ শতাংশ ঠিকাদার মোট চুক্তির মূল্যের ৬১.৩১ শতাংশ অর্জন করেছে, অন্যদিকে সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ ঠিকাদারের বাজার অংশীদারিত্ব সব মন্ত্রণালয়ের জন্য ১ শতাংশ এরও কম। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সরকারি কেনাকাটায় প্রতিযোগিতামূলক বাজার গড়ে উঠার কথা থাকলেও তা গড়ে ওঠেনি। উল্টো মন্ত্রণালয়গুলোতে ঠিকাদারদের অসম প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা গেছে।