ওসমানীনগরে মসজিদ উন্নয়ন কাজ নিয়ে দু’পক্ষের দফায় দফায় হামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ মার্চ ২০২৫, ৯:৫৭:৪০ অপরাহ্ন
ওসমানীনগর প্রতিনিধি: ওসমানীনগরের উত্তর কালনীর চরকেন্দ্রীয় জামে মসজিদের উন্নয়ন কাজ নিয়ে দু’পক্ষের বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। গ্রামে ডাকাত আতংক বলে এক পক্ষ মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিলে, অপরপক্ষ পুলিশের জরুরী সেবা নম্বর ৯৯৯ এ কল দিয়ে গ্রামে পুলিশ আনলে পুলিশও মারধরের শিকার হন। গত বৃহস্পতিবার থেকে বিভিন্ন সময়ে উপজেলার সাদীপুর ইউনিয়নের উত্তর কালনীরচর ও পাশর্^বর্তী জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের উত্তর কালনীরচর গ্রামে দফায় দফায় হামলায় উভয় পক্ষে উত্তেজনা ও আতংক বিরাজ করছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মারধরের শিকার হওয়ার অভিযোগে ওসমানীনগর থানা পুলিশের এসআই মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা (মামলা নং-১) দায়ের করেছেন। উত্তর কালনীর চর গ্রামটি ওসমানীনগর ও জগন্নাথপুর দুই উপজেলায় পড়েছে।
জানা যায়, উত্তর কালনীরচর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ওজুখানা, টয়লেটের সেফটিক ট্যাংকি ও মসজিদ মার্কেট নির্মাণ কাজ শুরু হলে, গত বৃহস্পতিবার গ্রামের ওসমানীনগর অংশের বাসিন্দা রুহেল মিয়া, আব্দুল হক ছানু মিয়া, খছরু মিয়া উন্নয়ন কাজ বন্ধের জন্য বাঁধা প্রদান করেন। এরই জের ধরে উভয়পক্ষে উত্তেজনা শুরু হয়। শুক্রবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য শওকত আলী মসজিদের পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারী মোবারক হোসেন মেন্দিকে মসজিদের মাইকে ডাকাত আতংক রয়েছে বলে মসজিদে ঘোষণা দেওয়ার কথা জানালে, ইমামকে দিয়ে মসজিদে গ্রামে ডাকাত আতংক রয়েছে বলে সবাইকে সজাগ থাকার কথা জানান। মাইকে ডাকাত আতংকের কথা শুনে গ্রামের ওসমানীনগর অংশের বাসিন্দা রুহেল মিয়া পুলিশের জরুরী সেবা নম্বর ৯৯৯এ কল দিয়ে বিষয়টি জানান। ওসমানীনগর থানা পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে রাত ১টার দিকে ঘটনাস্থলে গেলে আব্দুল হক ছানু মিয়া ও মোবারক হোসেন মেন্দির লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে উভয়পক্ষ মারামারিতে লিপ্ত হয়। এসময় ঘটনাস্থলে যাওয়া পুলিশ সদস্যরাও মারধরের শিকার হন।
এদিকে, শনিবার রাত ১২টার দিকে আব্দুল হক ছানু মিয়ার লোকজন প্রতিপক্ষ শিবরুল আমিন, আকাইদ, জুনাইদ, মন্তাজ মিয়া, সাবু মিয়া গংদের বাড়িতে ইটপাটকেল ছুড়ে হামলা করেন বলে অভিযোগ করেন মোবারক হোসেন মেন্দি। এতে তাদের বসতঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। মসজিদের পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারী মোবারক হোসেন মেন্দি বলেন, আমরা জগন্নাথপুরের বাসিন্দা। মসজিদও আমাদের উপজেলায় পড়েছে। মসজিদের কমিটিও আমাদের এলাকার লোকদের নিয়ে গঠিত। আমরা মসজিদের ওজুখানা, টয়লেটের সেফটি ট্যাংকি ও মসজিদ মার্কেট নির্মাণ কাজ শুরু করলে গ্রামের ওসমানীনগর অংশের বাসিন্দা রুহেল মিয়া, আব্দুল হক ছানু মিয়া, খছরু মিয়া কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। তারা আমাদের বাড়ি ঘরে ইটপাটকেল ছুড়ে হামলা করছেন। আমরা বাড়ি ঘরে নিরাপদে থাকতে পারছি না। রুহেল মিয়া বলেন, মসজিদের উন্নয়ন কাজ হতে আমাদের কোন বাঁধা আপত্তি নেই। আমরা চাই সবাই মিলে মসজিদের সামনে ঈদগাহ ও একটি মার্কেট নির্মাণ করতে। মসজিদের বর্তমান উন্নয়ন কাজেও আব্দুল হক ছানু মিয়া, লোকমান আলীসহ আমাদের সহযোগিতা রয়েছে। কিন্তু তারা আমাদের বাদ দিয়ে একা কাজ করতে চায়। আমরা কারো বাড়ি ঘরে হামলা করিনি। ইউপি সদস্য শওকত আলীর মোবাইল ফোনে বারবার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেন নি।
ওসমানীনগর সার্কেল এর সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান বলেন, ৯৯৯ এ কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে মসজিদের সামনে পুলিশ সদস্যরা মারধরের শিকার হন। এ ব্যাপারে ওসমানীনগর থানায় একটি পুলিশ এসল্ট মামলা হয়েছে।