জুলাই অভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘন : জাতিসংঘের প্রতিবেদন জেনেভায় উপস্থাপন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ মার্চ ২০২৫, ১২:১০:৪৭ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট : বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের বিক্ষোভে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের বিষয়ে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে। বুধবার ঢাকার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় জেনেভা থেকে এটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এ সময় বাংলাদেশে জবাবদিহিতা, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার সংস্কারের ফলাফল ও সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এর আগে গত সোমবার ভলকার তুর্ক আশা প্রকাশ করেন, তাদের সাম্প্রতিক স্বাধীন তথ্য-অনুসন্ধান প্রতিবেদনটি বাংলাদেশে সত্য বলা, জবাবদিহিতা, ক্ষতিপূরণ, নিরাময় ও সংস্কারে সহায়ক হবে। জেনেভায় মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৮তম অধিবেশনে বৈশ্বিক আপডেট জানানর সময় তিনি বলেন, ফৌজদারি মামলায় যথাযথ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা এবং সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক সহিংসতার তদন্ত করাটাও গুরুত্বপূর্ণ হবে।
তুর্ক বলেন, গত বছর সহিংসতার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিল বাংলাদেশ। কারণ তৎকালীন সরকার মানবাধিকারকে মশাল হিসাবে বহন করা একটি ছাত্র আন্দোলনকে নির্মমভাবে দমন’ করেছিল।
বাংলাদেশ এখন একটি নতুন ভবিষ্যতের রূপরেখা তৈরি করছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তাদের সাম্প্রতিক স্বাধীন তথ্য-অনুসন্ধান প্রতিবেদন এই যাত্রায় ‘গুরুত্বপূর্ণ অবদান’ রাখবে।
গত জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ওপর শেখ হাসিনা সরকার ও আওয়ামী লীগ যে দমন-নিপীড়ন ও হত্যাকা- চালিয়েছে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর)। এ প্রতিবেদনের বলা হয়েছে, বিক্ষোভ চলাকালে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই মিলিটারি রাইফেল এবং প্রাণঘাতী মেটাল প্যালেটস লোড করা শটগানে নিহত হয়েছে।
এই ধরনের শটগান সাধারণত বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করে থাকে। বিক্ষোভে কয়েক হাজার মানুষ গুরুতরভাবে আহত হয়েছে, কেউ কেউ আজীবনের জন্য কর্মক্ষমতা হারিয়েছে। প্রতিবেদনে গত জুলাই-আগস্ট মাসে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দ্বারা সংঘটিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, নির্যাতন এবং অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের মতো ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা উঠে এসেছে।
এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন গোষ্ঠী, সংগঠন এবং বিভিন্ন নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা জড়িত ছিল বলে প্রতিবেদনটিতে তুলে ধরা হয়েছে।