সিলেট জেলায় ক্যাপসুল পাবে ৪ লাখ ৩ হাজার ৫২৮ শিশু ৪-১
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ মার্চ ২০২৫, ৮:১১:৪৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: সিলেট জেলায় এবারের জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে ৪ লাখ ৩ হাজার ৫শ ২৮ জন শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী শনিবার এ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে। এতে ২ হাজার ৪শ ১৩ টি কেন্দ্রের মাধ্যমে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ৪৪ হাজার ২ জন শিশুকে ১টি করে নীল ক্যাপসুল এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুকে লাল ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
বৃহস্পতিবার সিলেটের সিভিল সার্জন কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. নাসির উদ্দিন এ তথ্য জানান। তবে যার অসুস্থ কিংবা ৪ মাসের মধ্যে একবার ভিটামিন এ ক্যাপসুল খেয়েছে অথবা যাদের বয়স ৫ মাসের কম বা ৫৯ মাসের বেশি তাদের এই ক্যাপসুল দেওয়া হবে না। তবে অসুস্থদের সুস্থ হওয়ার পর পরবর্তী নির্ধারিত তারিখে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে।
মতবিনিময়ে জানানো হয় সিলেট সদরে নীল ক্যাপসুল পাবে ৪ হাজার ৩শ ৬৯ জন এবং লাল ক্যাপসুল পাবে ৩৮ হাজার ৯২ জন, দক্ষিণ সুরমায় নীল ক্যাপসুল পাবে ২ হাজার ৬শ ৭২ জন এবং লাল ক্যাপসুল পাবে ২৩ হাজার ৬শ ৭০জন, বিশ^নাথে নীল ক্যাপসুল পাবে ২ হাজার ৭শ ৩০ জন এবং লাল ক্যাপসুল পাবে ২০ হাজার ৩শ ৮৬ জন, বালাগঞ্জে নীল ক্যাপসুল পাবে ১ হাজার ৫শ ৩৮ জন এবং নীল ক্যাপসুল পাবে ১১ হাজার ৩শ ৭০ জন, ওসমানীনগরে নীল ক্যাপসুল পারে ২ হাজার ৩ ৭৮ জন এবং নীল ক্যাপসুল পাবে ১৯ হাজার ৭শ ৪ জন, গোলাপগঞ্জে নীল ক্যাপসুল পাবে ৪ হাজার ২শ ৬২ জন এবং নীল ক্যাপসুল পাবে ৩৪ হাজার ৯৬ জন, ফেঞ্চুগঞ্জে নীল ক্যাপসুল পাবে ১ হাজার ৩শ ৫৮ জন এবং নীল ক্যাপসুল পাবে ১০ হাজার ৮শ ৪৮ জন, কানাইঘাটে নীল ক্যাপসুল পাবে ৪ হাজার ৩শ ৫৫ জন এবং নীল ক্যাপসুল পাবে ৩৩ হাজার ৯শ ৪০ জন, গোয়াইনঘাটে নীল ক্যাপসুল পাবে ৬ হাজার ৭৩ জন এবং লাল ক্যাপসুল পাবে ৪৯ হাজার ৯শ ৮৮ জন, বিয়ানীবাজারে নীল ক্যাপসুল পাবে ৩ হাজার ৪শ ৩৬ জন এবং লাল ক্যাপসুল পাবে ৩২ হাজার ২শ ২৪ জন, জৈন্তাপুরে নীল ক্যাপসুল পাবে ৩ হাজার ৩শ ৭ জন এবং লাল ক্যাপসুল পাবে ২৫ হাজার ৫শ ৩১ জন, কোম্পানীগঞ্জে নীল ক্যাপসুল পাবে ৩ হাজার ৮শ ৬৫ জন এবং লাল ক্যাপসুল পাবে ৩১ হাজার জন, জকিগঞ্জে নীল ক্যাপসুল পাবে ৩ হাজার ৬শ ৫৯ জন এবং লাল ক্যাপসুল পাবে ২৮ হাজার ৬শ ৭৭ জন।
ক্যাম্পেইনে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর পাশাপাশি বাচ্চাদের জন্য বাড়তি কিছু স্বাস্থ্য বার্তা ও পরামর্শ দিয়ে দেওয়া হবে বলে এই ক্যাম্পেইনের নাম প্লাস যুক্ত করে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন নাম দেওয়া হয়েছে।
মতবিনিময়ে জানানো হয় শিশুর সুস্থভাবে বেঁচে থাকা, স্বাভাবিক বৃদ্ধি, দৃষ্টিশক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন ‘এ’ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুপুষ্টি। ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে রাতকানা থেকে শুরু করে জেরোপথ্যালমিয়া’র মত রোগ হতে পারে যাতে চোখের দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ লোপ পেতে পারে। ভিটামিন ‘এ’ শুধু অপুষ্টিজনিত অন্ধত্ব থেকে শিশুদের রক্ষা করে তাই নয়, ভিটামিন ‘এ’ শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল ও জটিলতা কমায় এবং শিশু মৃত্যু ঝুঁকি কমায়।
বাংলাদেশে ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবজনিত সমস্যা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় পুষ্টিসেবা, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান বছরে দুইবার জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন করে থাকে। এছাড়া জন্মের পর পর-ই নবজাতক-কে শাল দুধ খাওয়ানো, জন্মের পর প্রথম ৬ মাস শিশু কে শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো, শিশুর ৬ মাস পূর্ণ হলে বুকের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি অন্যান্য সুষম খাবার খাওয়ানো, গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ সবুজ শাক সবজি ও হলুদ ফল মূল খাওয়ানো এবং রান্নায় ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ভোজ্য তেল ব্যবহার করা এ সকল পুষ্টি বার্তা ও প্রদান করা হবে।
ক্যাম্পেই বাস্তবায়নের প্রস্তুতি সম্পর্কে এসময় বলা হয় ইতিমধ্যে সিলেট জেলার সকল উপজেলার তদারককারি, মাঠকর্মী ও স্বেচ্ছাসবীগণ কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এছাড়া আসন্ন ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন সুষ্ঠু ভাবে বাস্থবায়ন, প্রস্তুতি ও ক্যাম্পেইন সংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রম যথাযথভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে সম্পন্ন করার নিমিত্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।