মোবারক হো মাহে রমজান
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ মার্চ ২০২৫, ৩:৩৪:৪৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: বান্দার জন্য মহান আল্লাহর বড়ো এক নিয়ামত হলো গুনাহ মাফের সুযোগ। আর গুনাহ মাফের মানেই হলো নিজের গুনাহর স্বীকার করে আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়া, তাওবা করা। তাওবা মানে ফিরে আসা। আর ইসলামি শরীয়তের পরিভাষায় তাওবা বুঝায় গুনাহ স্বীকার করে তারপর সেই গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে গুনাহের জন্য মাফ চেয়ে নেকির পথে ফিরে আসা। আর সামনের দিনে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া। অর্থাৎ তাওবাকারী গুনাহ যে করেছে এটা স্বীকার করতে হবে এরপর যে গুনাহ করেছে এটা ঠিক হয়নি খারাপ হয়েছে এই ভুল বুঝতে পেরে এর জন্য অনুতপ্ত হতে হবে, মনের ভেতর খারাপ লাগতে হবে এবং সামনের দিনগুলোতে যাতে গুনাহ না করতে হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এর মানে যে সমস্ত কর্মকান্ড করলে পরে গুনাহ করার সুযোগ তৈরি হতে পারে সে সমস্ত কাজ থেকে বিরত থাকা। এটা হলো যারা না বুঝে মনের অজান্তে কোনো গুনাহ করেছে তাদের তাওবার বেলায়। আর এমনিতো মুমিনদের সবসময় তাওবার উপর থাকতে হয়। এটা মুমিনের বৈশিষ্ট। এরদ্বারা মুমিনের মর্যাদা বাড়ে। ¯্রষ্টার সাথে সর্ম্পক গভীর হয়।
যারা গুনাহ বা আল্লাহর নাফরমানি করে তাদের নিরাশ হবার কিছু নেই। গুনাহ মানুষের হতেই পারে। কিন্তু এজন্য নিরাশ হয়ে প্রতিনিয়ত গুনাহের রাজ্যে ডুবে থাকার কোনো মানে নেই। অনেকেই মনে করেন জীবনে অনেক গুনাহ করেছি কাজেই ভালো হয়ে লাভ কী? আল্লাহ কী আমাকে মাফ করবেন? তাই তারা আরো বেশি করে গুনাহের কাজে জড়িয়ে পড়েন। এই ধারনাটাই আসলে মানুষের ভুল। মানুষ যে মুহূর্তে তার ভুল বুঝতে পেরে আল্লাহর কাছে মাফ চাইবে আল্লাহ তাকে মাফ করবেন। সূরা তাহরীমের ৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর বিশুদ্ধ তাওবা। তাহলে তোমাদের রব তোমাদের মন্দ কর্মগুলো মুছে দেবেন এবং তোমাদের প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যারা পাদদেশে নদী প্রবাহিত।’
সুতরাং বান্দা যদি তার ভুল বুঝতে পেরে আল্লাহর কাছে প্রকৃত অর্থে তাওবা করে তবে আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করে দেবেন। তার মর্যাদা বাড়িয়ে তাকে জান্নাত উপহার দেবেন। আর আগের গুনাহগুলোও আল্লাহ শুধু মাফ করবেনই না সেগুলো একেবারে মুছে দেবেন।
হজরত আনাস ইবনে মালিক রা. বর্ণিত একটি হাদিস। রাসূল সা. বলেছেন, আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান! যতক্ষণ তুমি আমাকে ডাকতে থাকবে এবং আমার থেকে (ক্ষমা লাভের) আশায় থাকবে, তোমার গুনাহ যত বেশিই হোক, আমি তোমাকে ক্ষমা করব, এতে কোনো পরওয়া করবো না। হে আদম সন্তান! যদি তোমার গুনাহর স্তুপ আকাশের কিনারা বা মেঘমালা পর্যন্তও পৌঁছে যায়, অতঃপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব, এতে আমি ভ্রুক্ষেপ করবো না। হে আদম সন্তান! যদি তুমি গোটা পৃথিবী ভর্তি গুনাহ্ নিয়েও আমার কাছে আসো এবং আমার সাথে কাউকে শরীক না করে থাকো, তাহলে আমিও তোমার নিকট পৃথিবী ভর্তি ক্ষমা নিয়ে উপস্থিত হবো।
এখানে
দেখা যাচ্ছে গুনাহ যত বড়োই হোক আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মাফ চাইলে মাফ করে দেবেন। আর গুনাহ মাফের মাধ্যম হলো তাওবা। গুনাহ যদি আল্লাহ আর বান্দার সম্পর্কে হয় অর্থাৎ কেউ আল্লাহর নাফরমানি করলো আর সে নাফরমানির জন্য ভুল বুঝে আল্লাহর কাছে মাফ চাইলো তবে আল্লাহ তাকে মাফ করবেন। তবে গুনাহ যদি কোনো বান্দার সাথে সম্পৃক্ত হয় অর্থাৎ কেউ যদি কারো হক মেরে থাকে তো আগে যার হক মেরেছে তার কাছ থেকে মাফ চেয়ে নিতে হবে তারপর আল্লাহর কাছে মাফ চাইতে হবে। তখন আল্লাহ মাফ করবেন।