সুনামগঞ্জে কপাল পুড়ছে টমেটো চাষীদের
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ মার্চ ২০২৫, ৫:৫৩:২৩ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জে টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। দাম কমে যাওয়ায় ক্রেতার অভাবে টমেটো বিক্রি হচ্ছে না। গাছেই ঝুলছে পাকা টমেটো। ক্ষেত থেকে টমেটো তুলতে কর্মচারীর খরচও উঠাতে পারছেন না সবজিচাষীরা। প্রক্রিয়াজাতকরণ বা সংরক্ষণের উপায় না থাকায় কপাল পুড়েছে চাষীদের।
সরজমিনে জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার মান্নানঘাট ও সেলিমগঞ্জে গিয়ে চোখে পড়ে ক্ষেতের পর ক্ষেত টমেটো চাষ করেছেন এলাকার চাষীরা। গজারিয়া, কাশীপুর, শরীফপুর, সেলিমগঞ্জ, কালাগুজা, ভুতিয়ারপুর, রামপুর সংবাদপুরসহ ১৫ গ্রামের চাষীরা মিলে টমেটো চাষ করেছেন। সেখানে কথা হয় টমেটো চাষী সিদ্দিক মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, ৩৩ বিঘা জমিতে ৫০ হাজার টাকা খরচ করে টমেটো আবাদ করেছি। এখন কেউ ৫০ টাকায় ১ মন টমেটো কিনতে চায় না। ফলে ক্ষেতেই টমেটো পঁচে যাচ্ছে। টমেটো চাষী আব্দুল আলিম বলেন, আমি ৬০ বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছি। খরচ পড়েছে ১ লাখ টাকা। উৎপাদন বেশী হওয়ায় দাম হাঁকছে না কেউ। এছাড়া বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে গেলে কর্মচারী ও পরিবহন খরচই উঠানো সম্ভব না। তাই গরুকে খাওয়ানো হচ্ছে টমেটো।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল আজাদ বলেন, সুনামগঞ্জ প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকা। তাই হিমাগারে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা কঠিন। বিদ্যুৎ না থাকলে সবজি পঁচে নষ্ট হবে। তবে চাষীদের অবিক্রিত সবজি সংরক্ষণের জন্য সিলেটে একটি হিমাগার স্থাপনের প্রস্তাবনা দেওয়া আছে মন্ত্রণালয়ে। সেটি পাস হলে চাষিরা সবজি সংরক্ষণ করতে পারবেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, সুনামগঞ্জ জেলায় এ বছর ১২ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে তিন লাখ ১৯ হাজার ২৬০ মেট্রিক টন আলু, টমেটো, কাঁচামরিচ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ডাঁটা, ধনেপাতা, মুলা, পুঁইশাক, কলমিশাক, লাল শাক, ক্ষীরা, শসা, তরমুজ, মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া, লাউসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি উৎপাদন হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৬৩৯ কোটি টাকা।