পরিকল্পনা ছাড়াই ড্রেনের কাজ শুরু: ২৭ বছরেও বিকশিত হয়নি শিল্পনগরীতে
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫:৫৮:৪৮ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: ২৭ বছরেও মৌলভীবাজার বিসিক শিল্পনগরীর পানি নিষ্কাশনের পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা হয়নি। বিকশিত হতে পারেনি শিল্পনগরীর কার্যক্রম। এনিয়ে হতাশা বিরাজ করছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। সম্প্রতি শিল্পনগরীর পানি ও বর্জ্য উজানের দিকে নিয়ে আশার পরিকল্পনা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের এমন দায়িত্বহীন কর্মকান্ডে ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিল্পনগরী স্থাপনের সময় পানি ও বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন দেয়া হয় ভাটির দিকের পার্শ্ববর্তী কাঞ্জাইর হাওরে। এ হাওরে বিষাক্ত পানি ও বর্জ্য নিষ্কাশনের কারণে স্থানীয়রা চাষাবাদ করতে পারেননি। হাওরের কয়েক একর জমি দূষিত হয়ে পড়ে। কৃষকরা দূষিত পানিতে নামলেই নানা রোগে আক্রান্ত হন। কৃষকদের দীর্ঘ দিনের দাবি ও আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি পানি নিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা মৌলভীবাজার-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের দিকে নেয়ার পরিকল্পনা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতেও আপত্তি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এলাকাবাসী শিল্পনগরী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন। উজান দিকে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা অযৌক্তিক ও দায়িত্বহীন কাজ বলে মন্তব্য করছেন স্থানীয়রা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, উজানের দিকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। শিল্পনগরীর পানি মৌলভীবাজার-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে জলাবদ্ধতায় রূপ নেবে। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়বে পার্শ্ববর্তী এলাকায়। বিসিক শিল্পনগরীর পাশেই যুব উন্নয়ন, সমবায় প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, পুুলিশ লাইন, জামেয়া মাদ্রাসা, জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিষাক্ত পানি ও বর্জ্যরে দুর্গন্ধে এই প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ঠিক মতো সেবা নিতে পারবেন না সাধারণ মানুষ।
১৯৯৮ সালে শহরতলির গুমড়া এলাকায় প্রায় পনেরো একর জমির ওপর ২ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় বিসিক শিল্পনগরী। স্থানীয় বাসিন্দা শাহনুর আহমদসহ এলাকাবাসী জানান, পূর্বের দিকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করলে নতুন করে দুর্ভোগের সৃষ্টি হবে। এলাকাবাসী মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। পানি ও বর্জ্যরে দুর্গন্ধে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়বে।এ বিষয়ে মৌলভীবাজার বিসিক শিল্পনগরী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: আফজাল উদ্দিন বলেন, পানি নিষ্কাশনের স্থায়ী সমাধান করতে হলে ভাটির দিকে জায়গা অধিগ্রহণ করে কুদালিছড়ায় পানি ও বর্জ্য ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তা মো: মাসুদ হুসেন বলেন, আমরা ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কারের কাজ শুরু করেছি। কিন্তু পানি নিষ্কাশন কোন দিকে হবে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। পানি নিষ্কাশনের সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা না করে কিভাবে কাজ শুরু করেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জায়গা অধিগ্রহণ করে কুদালিছড়ায় পানি ও বর্জ্য ফেললে ভালো হয়। বিষয়টা নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করছি।