কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে ভয়াবহ সাইবার হামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ মার্চ ২০২৫, ১১:৩৪:৪৯ অপরাহ্ন
আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া:
মালয়েশিয়ার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (কেএলআইএ) গত রবিবার (২৩ মার্চ) এক ভয়াবহ সাইবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলায় বিমানবন্দরের গুরুত্বপূর্ণ কম্পিউটার ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বিকল হয়ে পড়লে চরম দুর্ভোগে পড়েন কয়েক হাজার যাত্রী। প্রায় দশ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিমানবন্দরের ফ্লাইট ইনফরমেশন ডিসপ্লে সিস্টেম, উড়োজাহাজের যাত্রী তালিকাভুক্তকরণ কাউন্টার এবং মালপত্র পরিবহন ব্যবস্থা অচল হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক বিমান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।
দেশটির নিউ স্ট্রেইটস টাইমস জানিয়েছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি উচ্চপদস্থ সূত্র জানায়, রবিবার ভোররাতে এই সাইবার হামলা শুরু হয়। বিমানবন্দরের কর্মীদের বাধ্য হয়ে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে কাজ করতে হয়। অথচ, মালয়েশিয়ার জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা (নাকসা) এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (এমএএইচবি) পূর্বে এক যৌথ বিবৃতিতে দাবি করেছিল যে এই হামলায় বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কাজকর্ম কোনোভাবেই ব্যাহত হয়নি।
পত্রিকাটি আরো জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে সাইবার অনুপ্রবেশের মাধ্যমে কেএলআইএর মূল সার্ভারগুলোতে প্রবেশ করে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে, কারা এই হামলার পেছনে রয়েছে বা হামলার প্রকৃত উদ্দেশ্য কী, তা এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
এই সাইবার হামলার কারণে বহু ফ্লাইটের সময়সূচিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে এবং অসংখ্য ফ্লাইট বিলম্বে ছাড়ে। বিমানবন্দরের একটি দুর্বল ব্যাকআপ ব্যবস্থার কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনতে বেশ সময় লাগে। বিমান চলাচল শিল্পের একটি সূত্র জানায়, হামলার পরবর্তী দুদিনও ফ্লাইট সংক্রান্ত তথ্য প্রদর্শনের বোর্ডগুলো মাঝে মাঝে বন্ধ ছিল।
এদিকে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে কোনো প্রকার মুক্তিপণ দেওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। হ্যাকাররা এই সাইবার হামলা বন্ধের জন্য ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে জানা গেছে। বিমানবন্দরে এই সাইবার হামলার ঘটনাটি মালয়েশিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে এবং দ্রুত এর তদন্ত ও প্রতিকারের দাবি উঠেছে।