একুশে পদকপ্রাপ্ত লোকসংগীত শিল্পী সুষমা দাশ আর নেই
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ মার্চ ২০২৫, ১১:২৬:৪৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ::
দেশের বরেণ্য লোকসংগীত শিল্পী ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সুষমা দাশ পরলোক গমন করেছেন। বুধবার (২৬ মার্চ) বিকেলে সিলেট শহরের হাওলাদার পাড়ার নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।
পরিবারের সদস্যদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন সুষমা দাশ। তিনি সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তাঁর মরদেহ সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়, যেখানে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরীসহ বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় শিল্পীরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান পরিবেশন করেন: “আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে। তবু শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে।”
সুষমা দাশ ১৯২৯ সালে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার পেরুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন লোককবি রশিকলাল দাশ ও দিব্যময়ী দাশের জ্যেষ্ঠ কন্যা। ছোট ভাই পণ্ডিত রামকানাই দাসও ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী। তাঁর দীর্ঘ সংগীতজীবনে তিনি বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম, দুর্বিন শাহ, আলী হোসেন সরকার, কামাল পাশাসহ দেশের কিংবদন্তি লোকসংগীত শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করেছেন।
লোকসংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি ২০১৭ সালে একুশে পদক লাভ করেন। এছাড়া তিনি রবীন্দ্রপদক (২০১৯), কলকাতা বাউল ফকির উৎসব সম্মাননা (১৪১৭), যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সম্মাননা, লালন শাহ ফাউন্ডেশন সম্মাননা, জেলা শিল্পকলা একাডেমি গুণীজন সম্মাননা (২০১৫) ও বাংলাদেশ বেতার গুণীজন সম্মাননা অর্জন করেন।
শিল্পীর মরদেহ রাতেই তাঁর জন্মস্থান সুনামগঞ্জের শাল্লার পেরুয়া গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। মৃত্যুকালে তিনি চার ছেলে, দুই মেয়ে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে সিলেটসহ সারাদেশের সংগীতাঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।