মিয়ানমারে ধ্বংসস্তূপে শিশুদের খুঁজে ফিরছেন অভিভাবকরা
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১:৪২:৩০ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারের কয়াউকসে শহরে একটি প্রাক-প্রাথমিক স্কুলের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পড়ে আছে রংবেরঙের ব্যাকপ্যাক গোলাপি, নীল, কমলা। বইগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে মাটিতে। স্পাইডারম্যানের খেলনা, বর্ণমালার কার্ড, ভাঙা চেয়ার-টেবিল আর গার্ডেন স্লাইড সব মিলিয়ে এক করুণ দৃশ্য। শুক্রবার মিয়ানমারে আঘাত হানা ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে এ স্কুলটিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়েছে। খবর বিবিসির।
৭১ বছরের ক্যুই নেইন কাঁদতে কাঁদতে বললেন, তাঁর ৫ বছরের নাতনি থেট হ্টের সান এই স্কুলেই পড়ত। ভূমিকম্পের সময় মেয়েটির মা বাড়িতে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। হঠাৎ মাটি কেঁপে উঠলে তিনি দৌড়ে স্কুলে গেলেন, কিন্তু ততক্ষণে পুরো ভবন ধসে পড়েছে। তিন ঘণ্টা পর মেয়েটির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। “ভাগ্যিস, আমরা আমাদের প্রিয়টিকে অক্ষত অবস্থায় পেয়েছি,” বললেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, স্কুলটিতে ৭০টির মতো শিশু ছিল, বয়স ২ থেকে ৭ বছর। ভূমিকম্পের সময় তারা খেলাচ্ছলে শিখছিল। কিন্তু এখন সেখানে শুধু ইট, কংক্রিট আর লোহার রডের স্তূপ। স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, ১২ শিশু ও এক শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে। তবে স্থানীয়দের ধারণা, নিচতলা ধসে যাওয়ায় মৃতের সংখ্যা ৪০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
অনেক মা-বাবা রাত জেগে তাদের সন্তানের নাম ধরে কাঁদেছেন। উদ্ধারকর্মীরা বলছেন, শহরের সবাই সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল। কিন্তু এখন ধ্বংসস্তূপের পাশে নিঃসঙ্গ নীরবতা। রাজধানী নাইপিদোতেও ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ। একটি সরকারি আবাসিক ভবনের নিচতলা সম্পূর্ণ ধসে গেছে। ধ্বংসস্তূপে রক্তের দাগ, পচা গন্ধ—যেন অনেক লাশ এখনও চাপা পড়ে আছে। কিন্তু উদ্ধারকর্মীদের কোনো চিহ্ন নেই। পুলিশ হাত গুটিয়ে নিচ্ছে, কিন্তু কেউ মিডিয়াকে কথা বলতে দিচ্ছে না।
নাইপিদোর সবচেয়ে বড় হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগের ছাদ ধসে পড়েছে। বাইরে টেন্টে ২০০ জনের বেশি আহত রোগীর চিকিৎসা চলছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. থেট খাইং উইন সেখানে উপস্থিত থাকলেও সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি।