ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিন, ফ্রি ফ্রি গাজা’ বিক্ষোভে উত্তাল সিলেট
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ৯:৫৮:২৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : ‘ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিন, ফ্রি ফ্রি গাজা’ স্লোগানের সোমবার উত্তাল ছিলো সিলেট, উত্তাল ছিলো দেশ। সিলেটে দিনভর ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিক্ষোভ করছে ছাত্র-জনতা। উপজেলা সদর, পৌরশহর, নগর-বন্দর, হাট-বাজার ও ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে আওয়াজ উঠেছিলো ‘ইসরায়েলের আগ্রাসন, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘বিশ্বের মুসলিম, এক হও এক হও’ ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ, ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’। বিক্ষোভ-শ্লোগানে সিলেট যেন হয়ে উঠে একখন্ড ফিলিস্তিন।
একদিকে ছিলো ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি, অন্যদিকে বিভিন্ন সংগঠনের আপামর জনতার বিক্ষোভ। কর্মসূচীর প্রতি সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন পাবলিক ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোমবার তাদের কোনো ক্লাস-পরীক্ষা নেয়নি। বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।
ফিলিস্তিনের সমর্থনে শিক্ষার্থীরা ‘ফিলিস্তিন মুক্তি পাক, জায়নবাদ নিপাত যাক’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, জায়োনিজম নো মোর’, ‘ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘ফ্রি ফ্রি, প্যালাস্টাইন’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
এছাড়াও তাদের হাতে ‘ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন সেনাবাহিনী সাড়া দিন’, ‘আল আকসা মুক্ত করো, খিলাফত কায়েম করো’, ‘ভয়েস ফর দ্য ভয়েসলেস’, ‘যাদের হাতে মুসলিমদের রক্ত, তাদের সাথে কীসের বন্ধুত্ব’ প্রভৃতি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
এদিকে, ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর গণহত্যার প্রতিবাদে বৈশ্বিক ধর্মঘট কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সকাল থেকে সিলেটের বিভিন্ন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন ইসলামী রাজনৈতিক দল বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
রাজনৈতিক দল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর দিনভর মিছিল-সমাবেশে সিলেট মহানগর যেন একখন্ড প্রতিবাদী ফিলিস্তিনে পরিণত হয়। এসময় ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান দাবি করে সিলেটে কেএফসি রেস্টুরেন্ট ও জুতার কোম্পানি বাটার শোরুম ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। রেস্টুরেন্টের ভিতরে থাকা ইসরায়েলি বিভিন্ন কোমল পানীয় নষ্ট করা হয়। রাস্তায় বের করে পোড়ানো হয় বাটার জুতা।
এ সময় পুরো মহানগরে একসাথে উচ্চারিত হয়ে প্রতিবাদের ধ্বনি। বিক্ষোভকারীরা বলেন, আমরা যুদ্ধবিরতি চাই না। ফিলিস্তিনি ভাইদের ওপর আর একটি বুলেট ও বোমা যেন আক্রমণ করতে না পারে, আমরা সেই নিশ্চয়তা চাই। ফিলিস্তিনের রক্তের ওপর ব্যবসা হচ্ছে। আমরা এটা বন্ধ চাই। মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান, কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
ফিলিস্তিনিদের ওপর জুলুম-নির্যাতনের প্রতিবাদে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা জানানোর আহ্বান জানানো হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারা বলেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে দ্রুত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিন্দা জানাতে হবে। হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে, গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে। সুযোগ হলে ফিলিস্তিনে গিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জিহাদ করব।
বিভিন্ন সমাবেশে বক্তারা হুশিয়ার করে বলেন, ইসরায়েল একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র। আজকে তারা ফিলিস্তিনের ওপর আগ্রাসন চালাচ্ছে। পাঁচ থেকে দশ বছর পরে তারা বড় মুসলিম দেশগুলোকেও আক্রমণ করবে। তাই আর নিরব না থেকে মুসলিম দেশগুলোকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতেই হবে।