জগন্নাথপুরে হাওরজুড়ে বোরো ধান কাটার ধুম
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ এপ্রিল ২০২৫, ৮:১০:১৬ অপরাহ্ন
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে হাওরজুড়ে বোরো ধান কাটার ধুম পড়েছে। এতে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। জমির পাকা ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। যে যেভাবে পারছেন ধান কাটায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। কার আগে কে ধান কাটবেন, এ নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে হাওরে। ধান কাটতে এ পর্যন্ত হাওরগুলোতে মোট ৭৪টি হারভেস্টার মেশিন নেমেছে। সাথে রয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার ধানকাটা শ্রমিক। সবাই চান, প্রকৃতি অনুকূলে থাকতে দ্রুত ধান কেটে গোলায় তুলতে। যে কারণে ধানকাটা, মাড়াই করা, শুকানো ও ঘরে তোলা নিয়ে চারদিকে কৃষক-কৃষাণীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে। ফলে ধানকাটা উৎসবে মেতে উঠেছে হাওর। এ যেন গ্রাম বাংলার চিরচেনা রূপ। এর মধ্যে অনেকে জমির মাড়াই করা কাচা ধান হাওর থেকেই কমদামে বিক্রি করতে দেখা যায়। ইতোমধ্যে কাচা ও শুকনো ধান কিনতে হাওর এবং মাঠে ঝাপিয়ে পড়েছেন ধান ব্যবসায়ী ও তাদের প্রতিনিধিরা। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করলেও কয়েকজন কৃষক জানান, এখন ধানকাটা সহ অন্যান্য খরচ জোগান দিতে তারা কাচা ধান বিক্রি করছেন।
১২ এপ্রিল শনিবার সরেজমিনে উপজেলার নারিকেলতলা নয়াবন্দ হাওরে গিয়ে দেখা যায়, হারভেস্টার মেশিন ও শ্রমিকদের দিয়ে ধানকাটা চলছে। এ সময় কৃষক এনামুল হক জানান, গত কয়েক দিন আগে ঘর্ণিঝড়ের সাথে হালকা শিলাবৃষ্টি হয়েছিল। এতে ধানের কিছু ক্ষতি হয়েছে। তবে ধানের ফলন ভালো হয়েছে। যা পেয়েছি তাতেই অনেক খুশি হয়েছি। যদিও এবার ধানকাটা ও হাওর থেকে বাড়িতে নেয়ার পরিবহন খরচ অনেক বেশি মনে হচ্ছে। অন্যদিকে হাওরে অন্য কৃষকেরা হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কেটে বস্তাবন্দি করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ জানান, গত বছরের তুলনায় এবার জগন্নাথপুরে আবাদকৃত জমির পরিমাণ বেড়েছে। তাই ফলনও বেশি হয়েছে। এবার জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওর সহ সকল হাওর ও বাওরে মোট ২০ হাজার ৪২৩ হেক্টর বোরো জমি আবাদ হয়েছে। তা থেকে সরকারি ভাবে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ২৮ হাজার ৪২০ মেট্রিকটন ধান। এবার সময়ে সময়ে বৃষ্টিপাত হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। বর্তমানে হাওরে পুরোদমে ধানকাটা চলছে। ধান কাটতে এ পর্যন্ত আমাদের স্থানীয় ৫২টি ও বহিরাগত ২২টি সহ মোট ৭৪টি হারভেস্টার মেশিন হাওরে নেমেছে। এছাড়া স্থানীয় ৯ হাজার ও বহিরাগত ৬ হাজার সহ প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক ধান কাটছেন। আশা করছি, সময়ের আগেই বাম্পার বোরো ধান কৃষক ভাইদের গোলায় উঠবে ইনশাআল্লাহ।
যদিও স্থানীয় কৃষকদের দাবি, সরকারি হিসেবের চেয়েও বেশি জমি আবাদ হয়েছে এবং আরো বেশি ধান পাওয়া যাবে।