চারুকলায় নববর্ষের মোটিফে আগুন: ১ জন সনাক্ত, তদন্ত কমিটি গঠন
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ এপ্রিল ২০২৫, ৯:১৮:১৯ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে প্রস্তুতকৃত আনন্দ শোভাযাত্রার মোটিফে আগুন লাগানোর ঘটনা সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, একজন যুবককে মোটিফে লিকুইড ঢেলে এবং আগুন লাগিয়ে চলে যেতে দেখা গেছে। শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “প্রথমে ওই ব্যক্তি পর্দার আড়ালে প্রবেশ করে, তারপর মোটিফে লিকুইড দেয়। আড়ালে এসে লাইটার দিয়ে আগুন পরীক্ষা করে পরে মোটিফে আগুন লাগিয়ে বেরিয়ে যায়।”
চারুকলা অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইসরাফিল রতন জানান, ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, কালো টি-শার্ট ও মুখে মাস্ক পরা একজন যুবক মাত্র দেড় মিনিটের মধ্যে দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে আগুন লাগিয়ে চলে যায়। “ঘটনাটি পুরোপুরি পূর্বপরিকল্পিত বলেই মনে হয়েছে,” বলেন তিনি। এ ঘটনায় ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ নামের দুইটি মূল মোটিফ সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। এ দুটি মোটিফই এবারের নববর্ষের শোভাযাত্রায় বিশেষ আকর্ষণ ছিল বলে জানিয়েছিলেন আয়োজকরা।
চারুকলা অনুষদের ডিন আজহারুল ইসলাম জানান, ভোরে—সম্ভবত ফজরের সময়—এই আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ে একটি সভা ডাকা হয়েছে। এদিকে, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ফেসবুকে এক পোস্টে অভিযোগ করেছেন, আগুন লাগানোর পেছনে ‘ক্ষমতাচ্যুত সরকারের দোসররা’ জড়িত। তিনি ঘটনাটিকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে উল্লেখ করেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) জানান, “আপাতদৃষ্টিতে এটি দুর্ঘটনা নয়, পরিকল্পিতভাবেই আগুন লাগানো হয়েছে—এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত।” ঘটনার সময়কার বিস্তারিত বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আগুন লাগানোর আগে যুবকটি চারপাশ পর্যবেক্ষণ করে। দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করার সময় কয়েকটি কুকুর বেরিয়ে যায়। আগুন দেওয়ার পর সে আবার দেয়াল টপকে ছবির হাটের দিকে চলে যায়।
চারুকলার একজন শিক্ষক জানান, ঘটনার সময় দায়িত্বে থাকা প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা নামাজে ছিলেন এবং পুলিশ সদস্যরা পেছনের দিকে ওয়াশরুমে ছিলেন। সেই ফাঁকেই আগুন লাগানো হয়। চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে কমিটির সদস্য সংখ্যা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। শাহবাগ থানার ওসি মো. খালিদ মনসুর জানান, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।