ভোলাগঞ্জে বিজিবি’র উপর হামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৯:০৯:৪৪ অপরাহ্ন
কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ বাংকারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। পাথর বোঝাই নৌকা পানিতে ডুবানোকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুরে শ্রমিকরা এই হামলা চালায়। এ সময় উত্তেজিত শ্রমিকরা নৌকার টাকার জন্য বিজিবির ৩ সদস্যকে বেশ কিছুক্ষণ সেখানে আটক করে রাখে।
৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর শুরু হয় ভোলাগঞ্জ বাংকারে জমি খুঁড়ে পাথর লুটপাট। অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর প্রত্যক্ষ মদদে চলছে এই পাথর লুটপাট। কালাইরাগ, পাথর কোয়ারি ও ১০ নম্বর বিজিবি পোস্টের মধ্যেখানে অবস্থিত বাংকার। প্রথমদিকে বিজিবি’র কথা বলে নৌকা প্রতি ৫’শ টাকা করে নেওয়া হতো। তখন প্রতিদিন ৫-৭ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি হতো। এই টাকা স্থানীয় ৩টি বিজিবি ক্যাম্পে বন্টন করতো তারা। তখন বিজিবির ৩ ক্যাম্পের নৌকার মাঝি ও কালাইরাগের পিচ্চি কামালের মাধ্যমে টাকা নিত বিজিবি। বিষয়টি নিয়ে গত ২৫ নভেম্বর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনাও হয়। সেখানে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলে বিজিবিকে ১০ দিনের সময় দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে ৫ ডিসেম্বর সিলেট জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় উন্মুক্ত আলোচনা করতে আসেন এবং সে উন্মুক্ত আলোচনায়ও পাথর লুটপাট এবং চাঁদাবাজি হচ্ছে মর্মে উপস্থিত অনেকে অভিযোগ তুলেন বিজিবি সদস্যদের উপর। গত ৭ জানুয়ারি উপজেলার নারাইনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এলাকাবাসীর সাথে সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি)-এর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত কালাইরাগ গ্রামের একজন ছাত্র অভিযোগ করেন বিজিবি বাংকারের প্রতিটি নৌকা থেকে ৫’শ টাকা নিয়ে পাথর লুটপাট করাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান ৫’শ টাকা ধীরে ধীরে কমে এখন ২’শ টাকায় এসেছে। চাঁদাবাজিতে পিচ্চি কামালের সাথে যোগ হয়েছেন করিম, নাজিম ও দুলাল। ৫ আগস্টের আগে বাংকারে ১৪৪ ধারা জারি ছিল। আরএনবি’র পাশাপাশি বিজিবি সদস্যরাও বাংকার থেকে পাথর উত্তোলন করতে দিত না।
স্থানীয় শ্রমিকরা জানান ১৫ এপ্রিল কালাইগর ক্যাম্পের নায়েক কবির, সৈনিক শহিদ ও সজিব বাংকার এলাকায় টহলে আসেন। এসময় তারা একটি পাথর বোঝাই নৌকা পানিতে ডুবিয়ে দেয়। এসময় নৌকার মালিক শামীম মিয়া বিজিবি সদস্যদের বলে আমি টাকা দিয়ে নৌকা এখানে পাথর লোড করেছি। আমার নৌকা কেন পানিতে ডুবালেন। এ বিষয়টির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় কয়েকজন শ্রমিক বিজিবির ৩ জন সদস্যকে বাংকার এলাকা থেকে যেতে দিচ্ছেন না। শ্রমিকরা বলছেন আপনাদেরকে টাকা দিয়েছি তাহলে আমাদের নৌকা কেন পানিতে ডুবালেন।
বিজিবি কালাসাদেক কোম্পানি কমান্ডার জানান, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখছেন। কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনান জানান, বিজিবির সাথে ঝামেলার বিষয়টি জানতে পেরে আমরা বুধবার বাংকার এলাকায় অভিযান চালিয়েছি। বিজিবির পক্ষ থেকে আমাদেরকে কিছু জানানো হয়নি।