সদস্য সচিবের স্বাক্ষরে আহ্বায়ককে অব্যাহতি!
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৯:২০:২৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট জেলার আহ্বায়ক আকতার হোসেনকে সংগঠনের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যুগ্ম আহ্বায়ক সালমান খুরশেদকে। সংগঠনের সিলেট জেলার সদস্য সচিব নুরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার রাতে এ তথ্য জানানো হয়।
তবে ওই সিদ্ধান্ত ভুয়া দাবি করে আকতার হোসেন বলেন, ‘আমাকে অব্যাহতি দিতে হলে যারা কমিটি গঠন করেছেন, সেই কেন্দ্র থেকে এমন সিদ্ধান্ত আসতে হবে। সদস্য সচিবের স্বাক্ষরে আহ্বায়ককে অব্যাহতি দেওয়ার এখতিয়ার নেই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট জেলার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২২ মার্চ জাতীয় নাগরিক পার্টির ইফতার মাহফিলে লিডিং ইউনিভার্সিটির এক ছাত্রের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়। সেই মামলায় আহ্বায়ক আকতার হোসেনকে ৩ নম্বর আসামি করা হয়। পরে তিনি গ্রেপ্তার হন। এ কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট জেলার নির্বাহী কমিটি ও কনভেনর বডির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সিলেট জেলার আহ্বায়ক আকতার হোসেনকে মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আগপর্যন্ত সাংগঠনিক কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মামলা থেকে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগপর্যন্ত তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট জেলা আহ্বায়ক হিসেবে পরিচয় বা সাংগঠনিক কার্যক্রম করা থেকে বিরত থাকবেন।
এ ব্যাপারে সংগঠনের সদস্য সচিব নুরুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক আক্রাম হোসেনের সঙ্গে আলোচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাহী কমিটির ৩৮ জনের মধ্যে ২৩ জন এ সিদ্ধান্তে একমত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৯ জন এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে স্বাক্ষর দিয়েছেন। অন্য চারজন সিলেটের বাইরে রয়েছেন, তারাও স্বাক্ষর দেবেন। নির্বাহী কমিটির পাশাপাশি ৭ সদস্যের নির্বাহী বোর্ডও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে অব্যাহতির ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট জেলার আহ্বায়ক আকতার হোসেন।
তিনি বৃহস্পতিবার বলেন, গত বুধবার কনভেনার বডির কয়েকজনের একটি সিদ্ধান্তের কপি দৃষ্টিগোচর হয়েছে, যেখানে আমাকে আমার আহ্বায়ক পদ হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আমি এই সিদ্ধান্তের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি, কারণ কমিটির ২৭২ জন সদস্যের মধ্যে ২৫৪ জন সদস্য ও কনভেনর বডির বেশীরভাগ সদস্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক, সদস্য সচিব এ বিষয়ে অবগত নয়। পাশাপাশি এই সিদ্ধান্ত নৈতিকতার দিক দিয়ে সাংগঠনিক নীতির পরিপন্থী হিসেবে প্রতিয়মান এবং অগণতান্ত্রিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই বিষয়টি সম্পূর্ণই কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত দেওয়ার এখতিয়ার রাখে, এজন্য আমি এই সিদ্ধান্তের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, গত ২৩ মার্চ আমার নামে রজ্জুকৃত মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্তের কারণ দেখানো হচ্ছে সেই ঘটনা এনসিপির ইফতার মাহফিলে এনসিপির ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের অন্তর্গত ভুল বুঝাবুঝির কারণে ধাক্কাধাক্কির পর্যায়ে গড়ায়। একজন দায়িত্বশীল হিসেবে ফোনে ঘটনা জেনে নিষ্পত্তির জন্য মাহফিলে পৌঁছাই। দায়িত্বশীল হিসেবে দু’পক্ষেরই সাথে সমঝোতার টেবিলে আসার আহ্বান করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় দুপক্ষই আমার কথা না শুনেই হাতাহাতিতে লিপ্ত হন। পরে ভুক্তভোগী ও পারিপার্শ্বিক চাপে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে আমাকে মামলার আসামি করেন। কনভেনার বডির অনেকেই সেই মামলার নামে ও অজ্ঞাতনামা আসামি। মামলার পরের দিন শুধু আমাকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও সেদিনই আমি জামিনে মুক্তি পাই।