আত্মহত্যার চিন্তা করছেন আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ৭.১ শতাংশ লোক
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৭:১৩:২৭ অপরাহ্ন
শাবি প্রতিনিধি:
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ ৭.১ শতাংশ আন্দোলনকারী লোক আত্মহত্যার চিন্তা করছেন বলে সম্প্রতি এক গবেষণায় ওঠে এসেছে। এর মধ্যে ১.১ শতাংশ লোক অন্তত একবার হলেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে গবেষণায় পাওয়া গেছে। গবেষণাটি ৫৪১ জন গুলিবিদ্ধ আন্দোলনকারীর উপর পরিচালিত হয়, যারা এখনও শরীরে গুলির অংশ বহন করছেন।
গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, গণঅভ্যুত্থানে আন্দোলন করে গুলিবিদ্ধ হওয়া গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ৯১.৬% লোক পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারে ভুগছেন, ৮৯.১% বিষন্নতায় আক্রান্ত, ৮৮.২% মানসিক অস্থিরতা অনুভব করেন এবং ৭.১% আত্মহত্যার চিন্তা করেছেন।
গবেষকদল জানান, গবেষণায় মানসিক মূল্যায়নে ব্যবহৃত হয় পিএইচকিউ-৯, পিসি-পিটিএসডি-৫, কে-১০ এবং এসবিকিউ-আর স্কেল। স্ট্রাকচারাল ইকুয়েশন মডেলিং বিশ্লেষণে দেখা যায় পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি) এবং বিষণ্ণতার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া চিকিৎসা সম্পর্কে ভুক্তভোগীদের দৃষ্টিভঙ্গি তাদের মানসিক অস্থিরতা ও আত্মহত্যার চিন্তাকে প্রভাবিত করছে।
গবেষণায় আরও জানা যায়, লিঙ্গ, পেশা, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অভিজ্ঞতা এবং গুলির অবস্থান এই উপাদানগুলো মানসিক অবস্থার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে।
গবেষণাপত্র ২০ এপ্রিল তুরস্কের ইস্তানবুল তিচারেট ইউনিভার্সিটির ১ম আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ স্টাডিজ সম্মেলনে উপস্থাপিত হয়। ‘বুলেট ইনসাইড বডি: দ্যা সাইলেন্ট মেন্টাল সাফারিং অব জুলাই ২৪ আপরাইজিং ইনর্জুড প্রোটেস্টার্স ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামের এই গবেষণাটি উপস্থাপন করেন চীনের নানজিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মো আবু বক্কর সিদ্দিক। এতে সহ-গবেষক হিসেবে রয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহ জালাল আহমেদ, মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো রাজওয়ানুল্লাহ শাকিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো খালিদ সাইফুল্লাহ, এবং আমেরিকার টেক্সাস টেক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান।
প্রধান গবেষক মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, গুলিবিদ্ধরা শুধু শরীরে গুলি বহন করছেন না, তারা মানসিকভাবে প্রতিনিয়ত রক্তাক্ত হচ্ছেন। এই যন্ত্রণা নীরব, অদৃশ্য এবং অবহেলিত।
সহ-গবেষক শাহ জালাল আহমেদ বলেন, এই গবেষণা শুধুই পরিসংখ্যান নয়, এটি একটি সমাজিক ও মানবিক আহ্বান আহতদের চিকিৎসা, মানসিক সহায়তা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য।