সাদাপাথর লুটপাটের বিরুদ্ধে টাস্কফোর্সের অভিযান
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ৭:৩১:০৪ অপরাহ্ন
নয় জনকে ২ বছর করে জেল
কোম্পানীগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্র থেকে পাথর লুটপাটের বিরুদ্ধে টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে পাথর লুটপাটে জড়িত থাকায় ১০ জনকে হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৯ জনকে দুই বছর করে জেল দেওয়া হয়েছে। অন্য একজন ১৮ বছরের কম হওয়ায় তার বিরুদ্ধে সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে ১টা পর্যন্ত টাস্কফোর্সের এই অভিযান পরিচালিত হয়।
এর আগে দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকায় বৃহস্পতিবার ‘পাথর লুটেরাদের দৃষ্টি এখন সাদাপাথর’ শিরোনামে নিউজ প্রকাশিত হয়। নিউজ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন নাহারের নেতৃত্বে টাস্কফোর্সের অভিযানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রশাসনের সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা মিজানুল কবির, উপজেলা ভূমি অফিসের নাজির হাবিবুর রহমান ও পুলিশ এবং বিজিবি সদস্যরা। অভিযানে আটককৃতরা হলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দলইরগাঁও গ্রামের চান মিয়ার পুত্র মোহাম্মদ আলীম উদ্দিন, নতুন মেঘারগাঁও গ্রামের মৃত ইমাম হোসেনের পুত্র মকবুল হোসেন, দক্ষিণ কলাবাড়ী গ্রামের সনর আলীর পুত্র মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, কালাইরাগ গ্রামের হাজী আব্দুল মন্নানের পুত্র ফুল মিয়া, গোয়াইনঘাট উপজেলার লাকী গ্রামের আব্দুল রমিধের পুত্র ইকবাল মাহমুদ, মৃত হাবিবুর রহমানের পুত্র মোহাম্মদ কিবরিয়া আহমেদ, সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার বাসাকর গ্রামের মৃত রহমত আলীর পুত্র জাহাঙ্গীর আলম, মৃত আলী হোসেনের পুত্র আলী নূর, এবং কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার কাশেমপুর গ্রামের আব্দুল হেকিমের পুত্র মোহাম্মদ জজ মিয়া।
উপজেলা প্রশাসন জানায়, সকাল ৬টায় টাস্কফোর্স অভিযান চালানোর পর কয়েকশত পাথর লুটপাটকারী সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের উপর আক্রমণ করতে চেয়েছিল। এসময় তারা পাথর দিয়ে ঢিল ছুড়তে থাকে আভিযানিক দলের উপর। পরে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের সমন্বয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে পাথর লুটপাটকারীদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। এসময় ২০টি পাথর বহনকারী নৌকা ধ্বংস করা হয় এবং আরো ১৮টি নৌকা জব্দ করে বিজিবির জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতের বৃষ্টিতে ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। পরদিন বুধবার সকাল থেকে কালাইরাগ এলাকা দিয়ে নৌকাযোগে পর্যটন কেন্দ্র সাদাপাথর থেকে পাথর লুটপাট শুরু হয়। দিনে ও রাতে বাধাহীন ভাবে সহস্রাধিক ইঞ্জিন চালিত ও বারকি নৌকা দিয়ে লুট হচ্ছে এই পাথর। প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার উপরে পাথর লুটপাট হচ্ছে বলে জানা গেছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন নাহার বলেন, সাদাপাথর লুটপাটের বিরুদ্ধে টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ৪০ জন বিজিবি সদস্য ও ৭ জন পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় ১০ জনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে ৯ জনকে ২ বছর করে জেল দেওয়া হয়েছে। অন্য একজনকে সমাজ সেবা অফিসের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বালু-পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান অব্যহত থাকবে বলেও জানান তিনি।