গ্রেফতারের ১২ ঘন্টার মাথায় পরিবহন শ্রমিক নেতার জামিন : মিশ্র প্রতিক্রিয়া!
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ৯:৪০:১৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : গ্রেফতারের ১২ ঘন্টার মাথায় জামিন পেয়ে আদালত থেকে মুক্ত হয়েছেন জেলা শ্রমিকলীগ নেতা ও বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিাতাকারী জাকারিয়া আহমদ।
মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন মেজিস্ট্রেট আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান সিএনজিচালিত আটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের জেলা সভাপতি জাকারিয়া। সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট সাঈদ আহমদের উকালতনামায় জামিন পান সিলেটের পরিবহন সেক্টরের অন্যতম বিতর্কিত ও আলোচিত শ্রমিক নেতা জাকারিয়া।
এত অল্প সময়ে বিষ্ফোরকসহ ৪টি মামলায় তার জামিন নিয়ে সিলেটজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, গেফতারকৃত ঐ শ্রমিক নেতা দোষী কিংবা নির্দোষ সেটা আদালতে প্রমাণ হবে। প্রশ্ন হচ্ছে বিষ্ফোরকসহ ৪টি মামলার আসামী এত দ্রুত জামিন পায় কিভাবে। আর ১টি মামলায় যদি জামিন হয় তাহলে বাকী ৩টি মামলায় জামিন না নিয়ে তিনি মুক্ত হন কিভাবে? এ নিয়ে আমি বিস্মিত। বিষয়টি আদালত সংশ্লিষ্টদের খতিয়ে দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে নগরীর মদিনা মার্কেটস্থ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাকে কোতোয়ালী থানায় হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে তার গ্রেফতারের খবর শুনে রাত থেকেই কোতোয়ালী থানায় ভীড় জমান সিএনজি চালিত অটোরিক্সা শ্রমিকগণ। সকালে আদালতে নেয়া হলেও সেখানেও শতশত সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ভীড় করতে থাকেন। দুপুরে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করলে তিনি মুক্ত হন। এরপর আদালত প্রাঙ্গনেই তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হয়।
এরপর সংগঠন কার্যালয়ে গিয়ে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন জাকারিয়া আহমদ। বক্তব্যে তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় কোন পদে নেই এবং পরিবহন শ্রমিকদের সার্থে বিগত সরকারের বিভিন্ন সেক্টরের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করেছেন বলে জানান। এছাড়া তার বক্তব্যে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারকে বার বার বিগত সরকার বলে সম্বোধন করেন। একটিবারের জন্যও তিনি ফ্যাসিস্ট বা পতিত সরকার বলেন নি। এ নিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
সুত্রে জানা গেছে, জাকারিয়া আহমদের বিরুদ্ধে ছাত্র জনতার আন্দোলন চলাকালে হামলার অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগে এসএমপির বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সকল মামলায় তাকে শ্রমিক লীগ নেতা হিসেবে আসামী করা হয়েছে। এছাড়া জেলা সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি থাকার সুবাদে তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তিনি আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে সিলেটে দাপট দেখিয়ে শ্রমিকদের ব্যবহার করে কোনো কারণ ছাড়াই সড়ক অবরোধ করে জনভোগান্তির সৃষ্টি করতেন। ফ্যাসিস্ট আমলে বিরোধী দলগুলো হরতাল ডাকলে তার নেতৃত্বে রাস্তায় গাড়ী বের করা হতো। এছাড়া বিএনপি-জামায়াত কোন কর্মসূচী ডাকলে জনসমাগম ঠেকাতে গাড়ী বন্ধ রাখতে তিনি অগ্রনী ভুমিকা পালন করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে এসএমপির কোতোয়ালী থানার ওসি জিয়াউল হক জানান, জাকারিয়া আহমদকে ৪টি মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছিল। কয়টি মামলায় জামিন হয়েছে সেটা আদালতই ভালো বলতে পারেন।
এ বিষয়ে জানতে জাকারিয়ার আইনজীবী সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এডভোকেট সাঈদ আহমদের নাম্বারে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
তবে জাকারিয়ার সহযোগি এক পরিবহন শ্রমিক নেতা বলেন, তাকে একটি মামলায় আদালত জামিন দিয়েছেন।