আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল রাজধানী
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ মে ২০২৫, ৮:১৬:৩৬ অপরাহ্ন
গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে সরকার : প্রেস উইং
জালালাবাদ রিপোর্ট : আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার রাতের মতো শুক্রবারও উত্তাল ছিলো রাজধানী। শুক্রবার শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারীরা। স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল করেছেন কয়েক হাজার ছাত্র-জনতা।
এদিকে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে শুক্রবার বেলা ৩টার কিছু আগে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।
এর আগে ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচির ঘোষণা দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তার পরপরই শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা।
রাতভর বিক্ষোভ চলার পর শুক্রবার সকালে সেখানে যোগ দেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহ ও এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ঘোষণা দেন, বাদ জুমা যমুনার পূর্ব পাশে ফোয়ারার সামনে বড় জমায়েত করা হবে। একই সঙ্গে বিক্ষোভ কর্মসূচিও চলমান থাকছে।
এ ঘোষণা দেওয়ার সময় জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি জেনারেল ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদসহ ইসলামপন্থী কয়েকটি দলের নেতা-কর্মীরা হাসনাত ও নাসীরুদ্দীনের সঙ্গে ছিলেন। হাসনাতদের এ ঘোষণার পর সেখানে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়। পাঁচটি পিকআপ ভ্যান একত্র করে এই মঞ্চ তৈরি করা হয়।
শুক্রবার বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে মিন্টো রোড থেকে শাহবাগ অভিমুখে মিছিল নিয়ে আসেন আন্দোলনকারীরা। এরপর শাহবাগ মোড়ে বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা। এতে এনসিপি, ছাত্রশিবির, আপ বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা দলে দলে যোগ দেন।
এ সময় তারা ব্যান ব্যান আওয়ামী লীগ, একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর, ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, শেখ হাসিনার ফাঁসি চাইসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বিকেল ৫টার দিকে আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদের নেতৃত্বে কয়েকশ মানুষ মিছিল নিয়ে শাহবাগে যোগ দেন। এ ছাড়া কওমিসহ বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা যোগ দেন।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাংলামোটর অভিমুখ থেকে ঢাকা মহানগর শিবিরের শত শত নেতাকর্মী শাহবাগে এসে যুক্ত হন। এ সময় তারা শিবির শিবির স্লোগান দিতে থাকেন। শাহবাগে ব্লকেডে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা বলছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বেন না তারা। এর আগে সকালে যমুনার সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই জমায়েতের ডাক দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।
এ সময় তিনি বলেন, ফোয়ারার সামনে মঞ্চে বাদ জুমআ’ জনসমুদ্র হবে। তারা বুঝতে পারবে কারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চায়। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে বিক্ষোভ চলছে। হাসনাত আবদুল্লাহ এ অবস্থান কর্মসূচির ডাক দেন। তার আহ্বানে সাড়া দেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা। রাত ১টার দিকে মিছিল নিয়ে যমুনার সামনে যান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তাদের সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও ছিলেন।
এনসিপির পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরাও বিক্ষোভে অংশ নেন। রাত ১টার পর হেফাজতে ইসলামের বেশকিছু নেতাকর্মী যমুনার সামনে যান। রাত দেড়টার দিকে এবি পার্টির কিছু নেতাকর্মী সেখানে যোগ দেন। রাত ২টায় যোগ দেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতারা। এছাড়া বিক্ষোভে যোগ দেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, জুলাই ঐক্য, ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মীরাও।