শান্তিগঞ্জের ইনাতনগর: পাকা সড়কের বেহাল দশায় দুর্ভোগ চরমে
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ মে ২০২৫, ৮:২৯:২৪ অপরাহ্ন
শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি: শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের ইনাতনগর গ্রাম। বিশাল এ গ্রামে হাজারো মানুষের বসবাস। এ গ্রামের একমাত্র সড়ক পথের বেহাল দশায় হাজারো মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে ইনাতনগর গ্রাম ও ইনাতনগর উত্তরপাড়া জামে মসজিদের সামন থেকে মহাসিং নদীর পাড় পর্যন্ত প্রায় অর্ধ কিলোমিটার কাঁচা সড়কসহ সড়কটির মোট দূরত্ব প্রায় দুই কিলোকিমটার। পাকা অংশের কোথায়ও ভেঙে যাওয়া, কোথাও দেবে যাওয়ায় সড়কটি যান চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। অনেক জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে ছোটবড় গর্তের। ভাঙা আর গর্তের কারণে এই সড়কে চলাচলকারী রিকশা, সিএনজিরও সমস্যা বড় আকার ধারণ করেছে। চলাচলকারী যানবাহনের চালকরা সব সময় চরম ঝুঁকিতে দিনাতিপাত করেন।
শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইনাতনগর গ্রামের সড়কের অনেক স্থানে পাকা ডালাই ভেঙে গেছে। সড়কের শুরুর কালভার্ট থেকে কবরস্থান পর্যন্ত এবং ফজলু মিয়ার বাড়ির সামন থেকে ইনাতনগর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত স্থানের দুইপাশের বেশির ভাগ জায়গায় মাটি ধসে যাওয়ার কারণে খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে সড়কটি। এতে যানবাহন চলাচল খুব ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় পথচারীদের মাঝে ভীতি কাজ করছে। এ অবস্থা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। ফলে পথচারীদের দুর্ভোগ বাড়ছে। গর্তের কারণে কোন সময়ে যাত্রী নিয়ে উল্টে যায় যানবাহন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই সড়ক ব্যবহার করে আশপাশের গ্রামের মানুষসহ প্রায় ৭/৮ হাজার মানুষ চলাচল করেন। এছাড়াও এখানে রয়েছে ইনাতনগর পাগলা সরকারি মডেল হাইস্কুল এন্ড কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী, প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি হাফিজিয়া নূরানী মাদ্রাসা রয়েছে। রয়েছে ইনাতনগর কমিউনিটি ক্লিনিক। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও রোগীরা ব্যবহার করেন এই সড়ক পথ। দেখার হাওরের পাড়ের (বরকুল হাওর) কৃষকদের চলাচলের ভরসা এই সড়কে। এছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে যানবাহনের মাধ্যমে আসেন কিন্তু রাস্তার বেহাল দশার কারণে যানবাহন উল্টে যাওয়ার উপক্রম।
সূত্র জানায়, বেসরকারি সংস্থা এলজিইডির অর্থায়নে ২০০৩ সালে সড়কটি প্রথমবার পাকাকরণ হওয়ার পর এখন পর্যন্ত চোখে পড়ার মতো দৃশ্যমান কোনো সংস্কার লক্ষ করা যায়নি। বর্তমানে এটি যানবাহন ও চলাচলের জন্য দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। এলাকার লোকজনের অভিযোগ, সড়কের বড় ধরণের ও স্থায়ী সংস্কার কাজের জন্য জনপ্রতিনিধি কাছে গিয়ে সংস্কারের জন্য অনেকবার অবগত করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এই সড়ক ব্যবহার করে নিজ বাড়িতে নিয়মিত চলাচল করেন ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য আলী আহমদ। তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে সড়কটির স্থায়ী ও দীর্ঘ মেয়াদি উন্নয়ন সংস্কার এর জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। বড় কোন বরাদ্দ না পাওয়ায় সংস্কার কাজ করতে পারছি না। আমরা সড়কটি সংস্কার কাজের জন্য এলজিইডি অফিসসহ স্থানীয় প্রশাসনের কাছেও গিয়েছি অনেকবার। আশা করছি, কর্তৃপক্ষ আমাদের দুঃখ দুর্দশার কথা চিন্তা করে সড়ক সংস্কারের কাজে এগিয়ে আসবেন।
ভুক্তভোগী আবদুল লতিফ বলেন, এ রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। যদি এই করুণ অবস্থা চলতে থাকে তাহলে অচিরেই এই সড়কে কোনো যানবাহন চলাচল করবে না। গাড়ি নষ্ট হয়ে হয়ে যাওয়ার ভয়ে এই সড়কে কোনো গাড়ি ঢুকবে তো দূরের কথা রিকশাও প্রবেশ করবে না। তাই আমাদের দাবী এই রাস্তাটি যেনো দ্রুত সংস্কার সংস্কার করা হয়।
রিকশা চালক ফয়জুদ্দিন বলেন, অনেক সময় মানুষজন রিকশায় উঠতে চায় না। একবার গেলে শরীর ব্যথা করে। তাড়াতাড়ি সড়কের কাজ হওয়া দরকার।পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জগলুল হায়দার বলেন, আমার কাছে যে বরাদ্দ আসে তা একেবারেই কম। রাস্তাটি বড়। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় সড়কের কাজের জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো ফল পাচ্ছি না। এলজিইডি কর্তৃপক্ষ চাইলে এই কাজটি করে দিতে পারেন। এটা ছাড়াও আরো দু’একটি রাস্তা আছে। ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দের পরিমাণ খুব কম থাকার কারণে আমার দ্বারা সব কিছু হয়ে উঠে না।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী সাজেদুল আলম বলেন, ছোট বড় সব ভাঙন সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। ছোট ছোট সমস্যাগুলোর কাজ খুব দ্রুতই শুরু হবে। বড় কাজগুলো করতে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি সেগুলোও হয়ে যাবে।