মার্কিন মধ্যস্থতায় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ মে ২০২৫, ৯:৫৭:৩৯ অপরাহ্ন
‘দুর্দান্ত বুদ্ধিমত্তা’র জন্য দুই দেশকে ট্রাম্পের অভিনন্দন ♦এর আগে পাকিস্তানের অপারেশ ‘বুনইয়ান-উন-মারসুস’
জালালাবাদ রিপোর্ট : পাকিস্তানের ‘বুনইয়ান-উন-মারসুস’ অভিযান শুরুর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই য্দ্ধুবিরতিতে বাধ্য হয়েছে ভারত। স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে সকল সামরিক অভিযান বন্ধে সম্মত হয়েছে পাকিস্তানও।
পরমানু শক্তিধর দুই দেশের সরকার শনিবার বিকেল ৫টা থেকে যুদ্ধবিরতি এবং সকল সামরিক অভিযান বন্ধে সম্মত হয়। আমেরিকার মধ্যস্থতায় উভয়পক্ষ য্দ্ধুবিরতিতে রাজি হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যগুলো জানিয়েছে। পাঁচ দিন ধরে দুই দেশের মাঝে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিলো। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় দুই দেশেরই। বিশেষ করে পাকিস্তানের হামলায় ভারতের ৫টি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়, মারা যায় অন্তত: ২০ জন। এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় ছিলো পুরো বিশ্ব।
সবার আগে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ একটি পোস্টে যুদ্ধবিরতির বিষয়টি জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই পোস্টে তিনি বলেন, ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ রাত ধরে আলোচনার পর, আমি আনন্দের সাথে ঘোষণা করছি যে ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। বিবেচনা বোধ ও দুর্দান্ত বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের জন্য উভয় দেশকে অভিনন্দন। এই বিষয়ে আপনার মনোযোগের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ!
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দারও জানিয়েছেন, পাকিস্তান ও ভারত তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। পাকিস্তান সবসময় তার সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখ-তার সাথে আপস না করে এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছে।
ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রীও পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষ বিরতির সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান। পূর্ব ঘোষণা মোতাবেক শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় সাংবাদিক বৈঠকে এসে তিনি বলেন, শনিবার বিকেল ৫টা থেকে ভারত আর পাকিস্তান সব ধরনের সংঘর্ষ থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তান “তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে এবং একটি নিরপেক্ষ স্থানে বিস্তারিত বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে।
এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি আরও বলেছেন, শান্তির পথ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মোদী (নরেন্দ্র মোদী) এবং শরিফের (শাহবাজ শরিফ) প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা ও রাষ্ট্রনীতির প্রশংসা করি।
পাকিস্তান বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (পিএএ) জানিয়েছে, সব ধরনের ফ্লাইটের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে। তাদের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, দেশের সব বিমানবন্দর স্বাভাবিক ফ্লাইট পরিচালনার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
পাকিস্তানের অপারেশন ‘বুনইয়ান-উন-মারসুস’ :
উত্তেজনার সর্বশেষ অধ্যায়ে শনিবার ভোর থেকে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস’ চালু করে, যা সরাসরি ভারতীয় সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ভারতের ১১টি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা টার্গেট করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে পাঠানকোট, উধমপুর, গুজরাট, রাজস্থান বিমানঘাঁটি এবং ব্রাহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের গুদাম।
পাকিস্তানের সামরিক সূত্র অনুসারে, তাদের নিজস্ব তৈরি ফাতেহ-১ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে উধমপুর বিমানঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে। একই সঙ্গে উরি অঞ্চলের একটি ভারতীয় ব্রিগেড সদর দপ্তর এবং রসদ ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া সাইবার আক্রমণের মাধ্যমে ভারতের বিদ্যুৎ গ্রিডের ৭০ শতাংশ অকেজো করে দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তান বিমানবাহিনী দাবি করেছে, তাদের জেএফ-১৭ থান্ডার যুদ্ধবিমান থেকে উৎক্ষেপিত হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে ভারতের অত্যাধুনিক এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এডাম্পুর এয়ারবেসেও হামলা চালানো হয়েছে।এছাড়া ভাতিন্ডা, হালওয়ারা এবং সিরসা এয়ারফিল্ডেও হামলা চালানো হয়েছে, যা ভারতের বায়ু প্রতিরক্ষা অঞ্চলে গভীর অনুপ্রবেশের ইঙ্গিত দেয়।
সাইবার যুদ্ধের অংশ হিসেবে পাকিস্তান বেশ কয়েকটি ভারতীয় সরকারি ও সামরিক ওয়েবসাইট হ্যাক করেছে, যার মধ্যে রয়েছে বিজেপির সরকারি ওয়েবসাইট, ক্রাইম রিসার্চ ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি, মহারাষ্ট্র স্টেট ইলেকট্রিসিটি ট্রান্সমিশন কোম্পানি এবং ভারত আর্থ মুভার্স লিমিটেড। মহারাষ্ট্রে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র।
জবাবে ভারতীয় সামরিক বাহিনী পাকিস্তানের মুরিদ, নুর খান এবং শোরকোট বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ভারত দাবি করেছে যে, তারা আফগানিস্তানেও একটি ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
এর আগে বুধবার পাকিস্তানের নির্দিষ্ট কিছু স্থাপনা লক্ষ্য করে গভীর রাতে ঘুমন্ত মানুষ ও মসজিদকে টার্গেট করে আকাশ পথে হামলা চালায় ভারত। ভারত তাদের এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নাম দেয় ‘অপারেশন সিন্দুর’। কড়া জবাব দেয় পাকিস্তানও। পাল্টা হামলায় ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে। নিহত হয় অন্তত: ২০ ভারতীয়।