ছাতকে লিচুর বাম্পার ফলন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ মে ২০২৫, ৬:২৩:৪১ অপরাহ্ন
ছাতক প্রতিনিধি:
ছাতকে চলতি বছরেও লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। জৈষ্ঠ্য মাসের রসালো ফল পাকা লিচু এখানের গাছে গাছে ঝুলছে। এখানের লিচু বাগানগুলো এখন মনোমুগ্ধকর দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। চারিদিকে শুধু পাকা লিচু আর লিচুর সমাহার। ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের মানিকপুর, গোদাবাড়ী, বড়্গল্লা, চানপুর, রাজারগাও, কচুদাইড় গ্রামে রয়েছে রসালো ফল লিচুর বাগান।
দোয়ারাবাজার উপজেলার লামাসানীয়া গ্রামেও লিচু বাগানের বিস্তৃতি ঘটেছে। ছাতকের মানিকপুর গ্রামে প্রথমে বাণিজ্যিকভাবে লিচু চাষ শুরু হয়। আর এখান থেকেই আশপাশ গ্রামের মানুষ লিচু চাষে আগ্রহী হয়ে পড়েন।
স্থানীয়রা জানান, শতাধিক বছর পূর্বে গৌরীপুরের জমিদারের কাছারিবাড়ী ছিল মানিকপুর গ্রামে। বর্তমানে ঐ বাড়ীটিতে মানিকপুর জামে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। জমিদারের নায়েব হরিপদ রায় ও শান্তিপদ রায় কাছারি বাড়ীতে কয়েকটি লিচু গাছ লাগিয়েছিলেন। বিশাল আকারের লিচু গাছগুলো এখনো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে কাছারি বাড়ীতে। কাছারি বাড়ীর এসব লিচু গাছ থেকে গ্রামের বাড়ীতে ২/১ টি করে গাছ লাগিয়েছিলেন গ্রামের লোকজন। এ গাছগুলোতে লিচুর ভালো ফলন হওয়ায় এবং ভালো বাজারমূল্য পাওয়ায় লিচু চাষে গ্রামের অনেকেই আগ্রহী হয়ে পড়েন এবং বাণিজ্যিকভাবে কয়েকজন লিচু উৎপাদন শুরু করেন। ২০১৪ সালে বাগানীরা কোটি টাকার লিচু বিক্রি করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেন। এ থেকেই লিচুর গ্রাম হিসেবে মানিকপুর পরিচিতি লাভ করে।
পর্যায়ক্রমে আশপাশের গ্রামগুলোতেও বাণিজ্যিকভাবে লিচুর চাষ শুরু হয়। মানিকপুর গ্রামের লিচু চাষী আবু তাহের, রইছ মিয়া, আলী হোসেন, আরব আলী, শুকুর আলী, জামাল উদ্দিন, বাদল মিয়া, মতিউর রহমান, রবি মিয়া, গোদাবাড়ী গ্রামের আনর মিয়া, ফরিদ মিয়া, বাচ্চু মিয়া, রুস্তুম আলী জানান, বাড়ীর আঙ্গিনায় রোপণকৃত লিচু গাছের লিচু বিক্রি করে তাদের কিছুটা আয় হলে তারা লিচুর বাগান করতে আগ্রহী হন। মূলত তারা জমিদারের কাছারি বাড়ীর লিচু গাছ থেকেই চারা সংগ্রহ করে লিচুর বাগান করেছেন। প্রতিবছরই এখানে লিচুর ভালো ফলন হচ্ছে। কয়েকটি গ্রামের বাগানীরা লিচু বিক্রি করে প্রতি মৌসুমে প্রায় দেড় কোটি টাকা আয় করেন। লিচুর ভালো ফলনের জন্য উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতা নেন তারা। বাগানীরা জানান বাগানের লিচু চামচিকা পোকামাকড় থেকে রক্ষা করতে তাদের প্রচুর কষ্ট করতে হয়। লিচুর ভালো ফলন হওয়ায় চাষীরা আশাবাদী চলতি মৌসুমেও তারা দেড় কোটি টাকার লিচু বিক্রি করতে পারবেন।
ছাতক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক হোসেন খান জানান ছাতকে পূর্ব থেকেই লিচুর ফলন হতো। বর্তমানে এখানে উন্নতজাতের লিচুর চাষ হচ্ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় চলতি মৌসুমে ছাতকের মানিকপুরে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে।