ওসমানীনগরে ঠিকাদারের গাফিলতিতে ব্রিজের কাজ বন্ধ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ মে ২০২৫, ৭:৩৫:৪৮ অপরাহ্ন
ওসমানীনগর প্রতিনিধি: ওসমানীনগরের দৌলতপুর গ্রাম সংলগ্ন বুড়ি নদীর উপর নির্মাণাধীন ব্রিজ এর কাজ পেয়ে আয়ান এন্টারপ্রাইজ নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে কাজ ফেলে রাখায় এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। গ্রামবাসী সংশ্লিষ্টদের গত দুই বছর ধরে বারবার অবগত করলেও ব্রিজটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়নি। এ ঘটনায় গ্রামবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। অন্যদিকে ব্রিজটিতে নিম্নমানের কাজ হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন গ্রামবাসি।
জানা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে তৎকালিন সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান এর মেয়াদে উপজেলার পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রাম সংলগ্ন বুড়ি নদীর উপর প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি ব্রিজের কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আয়ান এন্টারপ্রাইজ। কাজ পাওয়ার পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সময়ে বরাদ্দের ৪০ শতাংশ টাকা উত্তোলন করে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে রাখে বলে অভিযোগ গ্রামবাসির। গেল বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি চলে আসার অজুহাত দেখিয়ে ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে দেন। এরপর এবারের শুকনো মৌসুম চলে গিয়ে আবার বর্ষার মৌসুম চলে আসলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেনি। ৩০ জুন পর্যন্ত কাজের মেয়াদ রয়েছে কিন্তু মাত্র একমাস সময়ের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন গ্রামবাসি। তাই তারা দ্রুত কাজটি শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন।
সরজমিনে ব্রিজটি দেখতে গেলে গ্রামের উপস্থিত লোকজন অভিযোগ করেন ব্রিজের ওয়ার্ক অর্ডারে যেখানে ১১টি রড দেওয়ার নিয়ম সেখানে ৭/৮টি রড দিয়ে নির্মাণ কাজ করা হয়েছে এবং গার্ডারের ঢালাই কাজ একদিনে সম্পন্ন করার নিয়ম থাকলেও দুই দিনে করা হয়েছে। দুই দিনে একটি পাকা কাজের ঢালাই ছাড়লে কাজটিতে মজবুতভাবে জোড়া না লাগার আশংকা রয়েছে।
নদীর পাশর্^বর্তী দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা সুবেন্দ্র দাস, ছাদিক মিয়া, অঞ্জন দাস, মতিলাল দত্ত, প্রাণেষ দাস বলেন, বুড়ি নদীর উপর নির্মাণাধীন ব্রিজটি আমাদের গ্রামের একমাত্র চলাচলের মাধ্যম। শুকনো দিনে বাঁশের সাঁকো আর বর্ষার দিনে নৌকা দিয়ে আমাদের পারাপার হতে হয়। ঠিকাদার কাজ পেয়ে দীর্ঘদিন ফেলে রাখেন। এরপর যা করেছেন তা অতি নিম্নমানের কাজ। ব্রিজের কাজ ভাল মানের করার জন্য আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছি। এরই মধ্যে গেল বছর তিনি কাজ ফেলে চলে গেছেন। ৩০ জুন কাজের মেয়াদ শেষ হবে। প্রশাসনের প্রতি আমাদের দাবী চুক্তিকৃত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি যেন সম্পন্ন করার ব্যবস্থা হয়।
আয়ান এন্টারপ্রাইজ নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক রাজীব এর ব্যবহৃত মোবাইলে বার বার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, আমি ওসমানীনগরে যোগদানের পর থেকে ঠিকাদারের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করছি যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন হয়। এ পর্যন্ত ঠিকাদার ৪০ শতাংশ বিল উত্তোলন করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, কাজটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দিয়েছি।