সংবাদ সম্মেলন : পরিবহন শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ মে ২০২৫, ৯:৩০:৪০ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটের সর্ববৃহৎ পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ উঠছে। এসব অপপ্রচার বন্ধে প্রশাসনের হস্থক্ষেপ কামনা করেন তারা। অন্যথায় বিক্ষুব্ধ পরিবহন শ্রমিকদের পক্ষ থেকে কর্মবিরতির হুশিয়ারী দিয়েছেন তারা। শনিবার (১৭ মে) দুপুরে সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন (বি-১৪১৮)-এর উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলন এসব অভিযোগ করা হয়। জিন্দাবাজারস্থ একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উক্ত সংগঠন ছাড়াও অন্যান্য পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মহিম। লিখিত বক্তব্যে আব্দুল মুহিম বলেন- জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের গত নির্বাচনে পরাজিত পক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার টানিয়ে দাবি করছে- সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ করেন। অথচ এমন কোনো প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। সব মিথ্যা ও বানোয়াট। আমরা বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
আব্দুল মুহিম লিখিত জানান- বর্তমান সভাপতি ময়নুল ইসলাম ও তিনি গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে স্ব স্ব পদে পুনরায় বিজয়ী হয়েছেন। তাদের ক্ষমতাকালে সাড়ে ৩ বছরে ১৩০ জন নিহত পরিবহন শ্রমিক পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে মোট ৬৫ লাখ টাকা নগদ অনুদান প্রদান করেছেন। যা সিলেটের পরিবহন সংগঠনের ইতিহাসে প্রথম। এছাড়া পরিবহন শ্রমিকদের জন্য সিলেট কদমতলি বাস টার্মিনাল এলাকায় ১ কোটি টাকার জায়গা ক্রয় করা হয়েছে। এটিও সিলেটের পরিবহন শ্রমিকদের জন্য প্রথম। নানা সময় শ্রমিকদের স্বার্থে নানা যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেওয়ার কারণেই ময়নুল ইসলাম ও আব্দুল মুহিমকে শ্রমিকরা পুনরায় নির্বাচিত করেছেন। আর এতেই হিংসাবশত পরাজিত পক্ষ তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
দীর্ঘ আওয়ামী দুঃশাসনের কবল থেকে চব্বিশের ৫ আগস্ট দেশ নতুন করে স্বাধীন হয়েছে উল্লেখ করে আব্দুল মুহিম তার বক্তব্যে আরও বলেন- বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের কাছে সারাদেশের সকল মানুষের ন্যায় পরিবহন সেক্টরের মানুষজনও জিম্মি ছিলাম। এজন্য বিভিন্ন সময় পরিবহন শ্রমিকদের স্বার্থে আমাদেরকে আওয়ামী সরকারের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বাধ্য হয়ে বসতে হয়েছে। এরপরও আমরা বিএনপি-জামায়াতসহ সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করে চলেছি এবং বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে কোনো উস্কানিমূলক বক্তব্য কখনো প্রদান করিনি। কিন্তু কুচক্রি মহল বিগত সময়ের ছবি দিয়ে অনলাইন প্লাটফর্ম ফেইসবুকে শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি ময়নুল ইসলামকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের ১নং সদস্য বলে দাবি করছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। মূলত: দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের ১নং সদস্য হলেন তেতলী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ময়নুল ইসলাম। এছাড়া শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুহিমকে গোলাপগঞ্জ উপজেলা শ্রমিক লীগের প্রচার সম্পাদক বলে মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও অপপ্রচার। বাস্তবে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক কেউই কোনোদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়- জেলার ১৫ হাজারের বেশী পরিবহন শ্রমিকদের নেতৃত্বাধিন সংগঠন সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন (বি-১৪১৮)- এর নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের কারণে একদিকে তাদের মানহানি হচ্ছে, অপরদিকে ১৫ হাজার শ্রমিককে বিক্ষুব্ধ করে তোলা হচ্ছে। অপপ্রচারের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী ও সরকারের বিভিন্ন এজেন্সীর প্রতি জোর দাবী জানানো হয়। অন্যথায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের পক্ষ থেকে কর্মবিরতির মতো কর্মসূচী আসলে সেটা দমিয়ে রাখা নেতৃবৃন্দের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতা উপস্থিত ছিলেন।