বকেয়া বেতন-ভাতাসহ মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষকদের ৫ দফা দাবি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ মে ২০২৫, ৯:৫৬:৪০ অপরাহ্ন
৫ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতাসহ মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (৮ম পর্যায়) প্রকল্প অনুমোদনের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন সিলেট জেলার মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষকরা। গতকাল শনিবার নগরীর কোর্ট পয়েন্টে জেলার ১৩ উপজেলার মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের প্রায় দেড় হাজার শিক্ষক, শিক্ষিকা, কেয়ারটেকার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধনে অংশ নেন। পরে মিছিল সহকারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারের হাতে স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ‘নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উন্নয়নে মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম’ প্রকল্পটি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাস্তবায়ন করে আসছে। প্রকল্পটি ১৯৯৩ সাল থেকে শুরু হয়ে ধারাবাহিকভাবে গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ তারিখে ৭ম পর্যায় সফলভাবে সমাপ্ত হয়। ১ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে প্রকল্পটির শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার লক্ষ্যে সরকারি অর্থায়নে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই ও শিক্ষা সহায়ক উপকরণ মুদ্রণ ও সরবরাহ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় শিক্ষা কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। গত ১৯ আগস্ট ২০২৪ খ্রি. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় ধর্ম উপদেষ্টা প্রকল্পের বিদ্যমান জনবলকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করার আশ্বাস প্রদান করেন। কিন্তু ঘোষণার বাস্তব অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি। গত ১৪ মে পরিকল্পনা কমিশনে অনুষ্ঠিত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। আমরা জানতে পারি, ৫ মাসের বেতন-ভাতা বাদ দিয়ে প্রকল্প অনুমোদনের তারিখ থেকে বেতন ভাতা প্রদান করা হবে। এতে এই প্রকল্পে কর্মরত ৮৪০০০ শিক্ষক, কেয়ারটেকার, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। গত ঈদুল ফিতরেও প্রকল্পের জনবল ও শিক্ষক-কেয়ারটেকারদেরকে বেতন-ভাতা দেওয়া হয়নি। বেতন-ভাতা না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে সবাই মানবেতর জীবনযাপন করছেন এবং কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার আলোকে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। পবিত্র ঈদুল আজহার পূর্বে তাঁদের বেতন-ভাতা প্রদান করা না হলে সারা দেশে সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন হবে।’
স্মারকলিপিতে ৫ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- জানুয়ারি-২০২৫ খ্রি. হতে প্রকল্প অনুমোদন করে ঈদুল আজহার পূর্বেই বেতন-ভাতা পরিশোধ, প্রকল্পে ৩য় থেকে ৭ম পর্যায় পর্যন্ত কর্মরত জনবলকে রাজস্ব খাতভূক্ত করা, ৭ম পর্যায় প্রকল্পের বিদ্যমান জনবলকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৮ম পর্যায় প্রকল্পে স্থানান্তর করা, কেয়ারটেকার ও কর্মীদের স্কেলভুক্ত করা এবং শিক্ষকদের সম্মানী ভাতা বৃদ্ধি করা।
এর আগে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট জেলা সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ এহসান উদ্দিন, মহানগর সভাপতি মাওলানা হাবিব আহমদ শিহাব, সিলেট জেলা ফিল্ড অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন, সিলেট সদর উপজেলা সিনিয়র ফিল্ড সুপারভাইজার সৈয়দ ফখরুল ইসলাম, মাস্টার ট্রেইনার মাওলানা মামুনুর রশিদ, মাস্টার ট্রেইনার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজার হাফিজ মাওলানা আব্দুল আহাদ, বিশ্বনাথ বালাগঞ্জ উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজার জামাল উদ্দিন, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজার আব্দুল আজিজ, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজার সাব্বির আহমদ, ওসমানী নগর উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজার মাসুক আহমদ, জৈন্তাপুর উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজার মো. ময়নুল হক, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ফিল্ড সুপারভাইজার ইসমাইল আলী, জকিগঞ্জ উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজার জাকির হোসেন, বিয়ানীবাজার উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজার ইকবাল হোসেন, কানাইঘাট উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজার গোলাম কিবরিয়া, মউশিক শিক্ষক কল্যাণ পরিষদ সিলেট জেলা সভাপতি মাওলানা নওফেল আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাফিজ আবিদ হাসান, বিভাগীয় সভাপতি মাওলানা মিনহাজ উদ্দিন, বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাকিম, বিভাগীয় অর্থ সম্পাদক মাওলানা ইদরিস আহমদ জাকারিয়া ও সিলেটের ১৩ উপজেলার মউশিক কল্যাণ পরিষদের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও নেতৃবৃন্দ। মানববন্ধনে জেলার ১৩টি উপজেলার প্রায় দেড় হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা, মডেল ও সাধারণ কেয়ারটেকার, প্রতিনিধি ও বিভিন্ন মসজিদের ইমামগণ অংশ নেন। বিজ্ঞপ্তি