দুর্নীতি যত কমবে বৈষম্য তত কমবে : দুদক চেয়ারম্যান
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ মে ২০২৫, ৬:০৯:১৫ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে দেশ স্বাধীনের পর একটা বাহিনীর উদ্ভব ঘটলো ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার। ৫ আগস্টের পর আরেকটার উদ্ভব ঘটলো ভুয়া সমন্বয়কের। চলুন আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করি এই ভুয়া দিয়ে। প্রথমটা শুরু হোক দুদকের ভুয়া চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এমনকি দুদকের প্রকৃত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তাকেও ধরবেন।
রোববার সকালে মৌলভীবাজার শিল্পকলা একাডেমিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের আয়োজনে গণশুনানীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন তিনি।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আজকের গণশুনানির উদ্দেশ্য কোনভাবেই কাউকে খাটো করা বা বড় করা নয়। সেটা অস্বীকার আমরা করি না, আমাদের মধ্যে কমবেশি দুর্নীতি রয়েছে। ঘুষ জ্ঞাত-অজ্ঞাতে, কেউ দ্রব্যেও গ্রহণ করে থাকি। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতির দুইটি দিক রয়েছে। একটি ডিমান্ড সাইট অপরটি সাপ্লাই সাইট। ডিমান্ড সাইট বলবে আমাকে কিছু ঘুষ দিতে হবে আর সাপ্লাই সাইট বলবে আমি কিছু ঘুষ দেব আমাকে কাজটা করে দেন। সবার আগে সাপ্লাই সাইটটা বন্ধ করতে হবে। সাপ্লাই সাইট বন্ধ হয়ে গেলে ডিমান্ড সাইট বন্ধ না হয়ে কোন উপায় নেই। আর দুর্নীতি বৈষ্যমের সৃষ্টি করে। দুর্নীতি যত কমবে বৈষম্য তত কমবে।
তিনি বলেন, মিথ্যাচার থেকে দুর্নীতির শুরু। আমাদের জনবল খুব কম। এখন দাবি উঠে জনবল বাড়ানোর। জনবল না বাড়ালে কিভাবে আমরা দুর্নীতি কমাবো। আমাদের জনবল যত বাড়বে, আমাদের বেতন তত বাড়বে, আপনাদের ট্যাক্সও বাড়বে। আমরা দুর্নীতি দমন কমিশনকে বড় করবো না, দুর্নীতি কমাবো? দুর্নীতি যত কমবে, আমাদের বেতন তত কমে আসবে।
আবদুল মোমেন বলেন, আপনার অফিসে, আমার অফিসে দুই একজন দুর্নীতিবাজ যে নেই তা আমরা অস্বীকার করবো না। সেই দুর্নীতিবাজদের কারণে আমরা সেবাগ্রহীতার কাছে নিন্দনীয় হবো। বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। আর প্রতিটি অফিসে সপ্তাহে না হলেও মাসে একবার গণশুনানীর আয়োজন করেন। এই গণশুনানীর মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
জেলা প্রশাসক মো. ইসরাঈল হোসেনের সভাপতিত্বে গণশুনানীতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দুদকের কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ, দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক মো: আক্তার হোসেন, পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় হবিগঞ্জের উপপরিচালক মো: এরশাদ মিয়া।
গণশুনানীতে পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মৌলভীবাজার, ভূমি অফিস, সরকারি মহিলা কলেজ, হাফিজা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ বেশ কিছু সরকারি অফিসের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীরা। এসময় তার জবাব দেন অফিস প্রধানরা এবং কিছু ঘটনায় ভুল স্বীকার করে তার প্রতিকার করার উদ্যোগ নেবেন বলে জানান সেবাদাতারা।