সরকার যাদের চেয়ারে বসায় তারাই দুর্নীতি করে : দুদক কমিশনার
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ মে ২০২৫, ৬:১৯:৪১ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: দুদক কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ বলেছেন, বাংলাদেশের কৃষক শ্রমিক রিকশা চালকরা কোনো দিনও ঘুষ খায় না- দুর্নীতি করে না। তাদের ২শ বা ৫শ টাকায় ঘর সংসার চলে। বেশিরভাগই যাদেরকে সরকার আমানতদার ও বিশ্বস্ত মনে করে চেয়ারে বসায় তারাই দুর্নীতি-লুটপাট করে। তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পরে দুর্নীতি কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে। স্বাধীনভাবেই গণমানুষের সাথে কাজ করতে পারছে। যার কারণে প্রতিটি জেলা উপজেলা ও বিভাগীয় শহরগুলোতে বিভিন্ন দপ্তরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হয়েছে।
তিনি সোমবার সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও দুদকের আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাছনরাজা মিলনায়তনে গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন।
দুদক কমিশনার বলেন, মানুষ এখন দুর্নীতির বিষয়ে অনেক সচেতন হয়েছে। বিভিন্ন অফিস আদালতে মানুষ এখন মন খুলে কথা বলতে পারছে। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে মানুষের হাতের কাছেই এখন সব কিছু মিলছে। বাংলাদেশে বসে মানুষ জানতে পারছে থাইল্যান্ড সিঙ্গাপুরে কি হচ্ছে। যার কারণে আশেপাশের ঘটনা মানুষ নিজ চোখেই দেখতে পারছে। অবৈধভাবে যারা সফল হয়েছে দুর্নীতি হচ্ছে তাদের হাতিয়ার, এর জন্যই দেশের মানুষের মনে যে ক্ষোভ জন্মেছিলো সেটির জন্য চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান।
দুদক কমিশনার বলেন, যে ঘুষ চাইবে তার বিরুদ্ধে চিৎকার করবেন, মানুষ জড়ো করবেন, প্রতিবাদী হবেন। প্রতিবাদ করতে কোনো ধরনের টাকা-পয়সা লাগে না, প্রতিবাদ করতে কোনো শিক্ষা লাগে না। প্রতিবাদ করতে লাগে সৎসাহস। প্রতিবাদে কাজ না হলে দুদককে জানান। দুদকের জালে আটকা পড়লে বের হতে পারবেননা। অতএব ঘুষ, দুর্নীতি করবেননা। সাবধান হয়ে যান।
গণশুনানিতে পাসপোর্ট অফিস, ভুমি অফিস, শিক্ষা অফিস, স্বাস্থ্য, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিআরটিএ, কৃষি অফিস, সমাজসেবা, ট্রাফিক, পিআইও বিদ্যুৎ, পৌরসভা, এলজিইডি, সড়ক ও জনপথ, সাবরেজিস্ট্রারসহ ২৫ টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৫৫ টি অভিযোগ জমা পড়ে।
গণশুনানিতে শাল্লার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) নুরুন নবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকার পরও দুদকের ডাকে সাড়া না দিয়ে শুনানিতে অনুপস্থিত থাকেন এবং দুদকের এক কর্মকর্তাকে ফোনে ‘আপনারা যা পারেন তাই করতে’ বলেন। বিষয়টি নিয়ে শুনানীতে আলোচনা হলে দুদক তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করবেন বলে জানান। এলজিইডি, পাসপোর্ট অফিস ও জেলা নির্বাচন অফিসে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ এসব খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। এছাড়া সেবাপ্রাপ্তিদের সমস্যা সমাধানে সময়ও বেঁধে দেন। এসব অভিযোগ মনযোগ সহকারে শুনেন দুদক কমিশনার।
পুরো অনুষ্ঠানের মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন সভার সভাপতি সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া।