বড়লেখায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিধিবহির্ভূত সরকারি গাছ কর্তনের অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ মে ২০২৫, ৭:৪১:৫৩ অপরাহ্ন
বড়লেখা প্রতিনিধি: বড়লেখা উপজেলার ডিমাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মীর মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিধি বর্হিভূতভাবে স্কুলের ভূমির অর্ধ-লক্ষাধিক টাকা মূল্যের একটি পুরাতন আকাশি গাছ কর্তন ও পরে স্কুল মাঠে কেটে রাখা গাছের ৯টি টুকরো (খাড়া) গত ৯ মে স্কুল বন্ধকালিন বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোববার শিক্ষার্থী অভিভাবক ও এলাকার সচেতন মহল এ ব্যাপারে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
প্রধান শিক্ষকের দাবি পার্শ্ববর্তী জমির মালিকের ফসলের উপর গাছটি পড়ে গিয়েছিল। তার চাপে তিনি গাছটি কেটে স্কুল মাঠে রাখেন। পরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকায় গাছটি বিক্রি করেন। কাটানো বাবত সাড়ে চার হাজার টাকা শ্রমিক ব্যয় মিটিয়ে অবশিষ্ট ১ হাজার টাকা তিনি সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন। তবে এলাকাবাসী জানান, তাদের লিখিত অভিযোগের পর তিনি এই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন। যা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো।
লিখিত অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক মীর মুহিবুর রহমান ৮/৯ মাস আগে বিধিবর্হিভুতভাবে স্কুলের ভূমির প্রায় ৬০ বছরের পুরাতন ৬০/৭০ হাজার টাকা মূল্যের একটি আকাশি গাছ শ্রমিক লাগিয়ে কাটান। কর্তনকালিন গাছটির আংশিক ও সম্পূর্ণ ডালপালা দুটি গাড়িতে করে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। গাছের ৯টি খন্ড স্কুল মাঠে জড়ো করে রাখেন। গত ৯ মে স্কুল বন্ধকালিন গাছের এই ৯টি খন্ডও তিনি নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে টরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফখরুল ইসলাম, এলাকার বাসিন্দা সুমন আহমদ, মুজিবুর রহমান, ফয়জুর রহমান, গিয়াস উদ্দিন, আলী হোসেন, আব্দুল মুকিত প্রমুখ অভিযোগ করেন প্রধান শিক্ষক যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে গাছটি বিক্রির ব্যবস্থা নিলে সরকারের ৫০/৬০ হাজার টাকা রাজস্ব আয় হতো। কিন্তু তিনি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রথমে গাছটি কাটেন। তৎক্ষণাৎ কিছু অংশ এবং পরে গাছের পুরো অংশই বাড়িতে নিয়ে যান। অভিযোগকারিরা বলেন, ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়ার খবর পেয়ে প্রধান শিক্ষক গাছ বিক্রি বাবত মাত্র ১ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন। অর্ধলক্ষাধিক টাকার গাছের মূল্য মাত্র ১ হাজার টাকা পরিশোধে এলাকায় হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে। এটিও প্রধান শিক্ষকের বড় ধরণের দুর্নীতি বলা যায়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার একেএম জোবায়ের আলম জানান, গত বছরের সেপ্টম্বর/অক্টোবর মাসের দিকে নিয়মিত ভিজিটে গিয়ে স্কুল মাঠে কাটা গাছের ৯টি খন্ড দেখতে পান। বিক্রয়ের যথাযথ প্রক্রিয়া নিতে প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দিয়ে যান। কিন্তু তিনি কোনো প্রক্রিয়া নেননি। শিক্ষা অফিসকে জানিয়ে গাছ কাটছেন ও নিজে কিনে বাড়ি নিয়েছেন বলে প্রধান শিক্ষক যে বক্তব্য দিয়েছেন তা মিথ্যা। স্কুলের গাছ বিধিবর্হিভুতভাবে তিনি কেটেছেন ও বাড়িতে নিয়েছেন। রোববার সরেজমিনে পরিদর্শন করে এলাকাবাসীর অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
ইউএনও তাহমিনা আক্তার জানান, রোববার স্কুলের সরকারি গাছ আত্মসাতের একটি লিখিত অভিযোগ পান। অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিধি মোতাবেক যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।