উন্নয়নের ছোঁয়া শাবিতে, চলমান ৯ প্রকল্পের কাজ
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ মে ২০২৫, ১২:৩০:৪৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: অবকাঠামোগত দিক থেকে পিছিয়ে পড়া শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) অবশেষে লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। দেশের প্রথম এই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ে চলমান রয়েছে ৯ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, আবাসিক হল, আন্তর্জাতিক হোস্টেল, শিক্ষক কোয়ার্টার ও আধুনিক মসজিদসহ নানা অত্যাধুনিক স্থাপনা গড়ে ওঠছে বিশ^বিদ্যালয়ে। এছাড়াও শিগগির আরও ৬টি প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কাজ শুরু হবে। এসব প্রকল্প সমাপ্ত হলে কাঙ্খিত গন্তব্যে এগিয়ে যাবে বিশ^বিদ্যালয়, এমনটাই মনে করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন বড় ভূমিকা রাখে। তাই চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হলে বদলে যাবে শাবিপ্রবি। পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত হলে বাড়বে শিক্ষা ও গবেষণার মান। ফলে বাড়বে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীও।
জানা গেছে, প্রতিষ্ঠার ৩৯ বছরেও পর্যাপ্ত একাডেমিক, প্রশাসনিক ও আবাসিক ভবনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় স্থাপনা গড়ে ওঠেনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ে। ৩০ বছর মেয়াদী মহাপরিকল্পনা ২০১৫ সালে শেষ হলেও সেই মহাপরিকল্পনার সিকিভাগও পূরণ হয়নি। ফলে বিভাগগুলোর ক্লাসরুম, শিক্ষকদের বসার কক্ষ ও শিক্ষার্থীদের আবাসন সুবিধা ৫০ ভাগও নিশ্চিত করতে পারেনি বিশ^বিদ্যালয়টি। তবুও সীমিত সম্পদের সঠিক ব্যবহার করে শিক্ষা ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জায়গা করে নিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। গত ৩৯ বছরে বিশ^বিদ্যালয়ে ৬টি একাডেমিক ভবন, ৬টি আবাসিক হল ও ২টি প্রশাসনিক ভবনসহ অন্য কিছু স্থাপনা গড়ে ওঠেছে।
বিশ^বিদ্যালয়ের পরিকল্পনা দপ্তর বলছে, বর্তমানে বিশ^বিদ্যালয়ে ৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ২টি আবাসিক হল, ১০ তলা বিশিষ্ট একটি প্রশাসনিক ভবন, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি হোস্টেল, শিক্ষক কোয়ার্টার, আধুনিক মসজিদ ও ২টি একাডেমিক ভবন অন্যতম। শিগগির আরও ৬টি প্রকল্পের টেন্ডার সম্পন্ন হবে।
সরজমিনে দেখা গেছে, ক্যাম্পাসের আইআইসিটি ভবনের পশ্চিমে নির্মাণ কাজ চলছে ১০ তলা বিশিষ্ট ১টি নতুন প্রশাসনিক ভবনের। ২টি একাডেমিক ভবনের কাজ চলছে অ্যাপ্লাইড সায়েন্স অনুষদের জন্য। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য নির্মিত হচ্ছে ৭ তলা আন্তর্জাতিক হোস্টেল। ১১ তলা শিক্ষক-কর্মকর্তা কোয়ার্টারেরও নির্মাণ কাজ চলছে। প্রক্টর ও প্রভোস্টসহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা, যারা ক্যাম্পাসে সার্বক্ষণিক অবস্থান করেন, তাদের জন্য ৪০ ইউনিটের ১টি আবাসিক ভবন নির্মাণের কাজ শিগগির শুরু হবে। শাহপরান হলের পেছনে গড়ে উঠছে ১০ তলা একটি ছাত্র হল, আসন সংখ্যা এক হাজার। ১ হাজার আসন বিশিষ্ট ছাত্রী হলের নির্মাণ কাজ চলছে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের পাশে।
ক্যাম্পাসে প্রবেশের সময়ই চোখে পড়বে এক কিলোমিটার রাস্তায় দুটি নতুন স্প্যান ব্রিজের কাজ। শাহপরান হলের সামনে তৈরি হচ্ছে ৪তলা বিশিষ্ট আধুনিক মসজিদ। এছাড়াও প্রধান ফটকের পূর্বপাশে ১টি বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন স্থাপনার কাজ, অ্যাগ্রিকালচার এন্ড মিনারেল সায়েন্সেস এবং ম্যানেজমেন্ট এন্ড বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যাকাডেমিক ভবনের জন্য ১০তলা ১টি ভবনের কাজ শিগগির শুরু হবে।
নতুন প্রকল্পগুলো সমাপ্ত হলে ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসন সমস্যা, ক্লাসরুম সংকট ও প্রশাসনিক দপ্তরের কক্ষ সংকট কেটে যাবে বলে মনে করছেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, বর্তমানে ৯টি প্রকল্পের কাজ চলছে। আরও ৬টি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শিগগির এসব প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বদলে যাবে শাবিপ্রবি। গুণগত শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ নিশ্চিত হবে। ফলে শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে যাবে বিশ^বিদ্যালয়।