শাবিতে দিনব্যাপী চা প্রদর্শনী : চীন-বাংলাদেশের চা-বাণিজ্যের নতুন দিগন্তের সম্ভাবনা
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ মে ২০২৫, ৭:২১:১৬ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যে চা বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন চা বাগান মালিক, উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের অংশগ্রহণে সিলেটে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘চা প্রদর্শনী ২০২৫’। প্রদর্শনীতে আয়োজক হিসেবে ছিলেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধীনস্থ চাইনিজ কর্ণার, ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড টি টেকনোলজি বিভাগ এবং ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস। চীনের ৭ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল এই চা প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন।
মঙ্গলবার (২০মে) সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন সামাজিক বিজ্ঞান ভবনে এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, চায়না- বাংলাদেশের মধ্যে চা-এর বিনিময়ের মাধ্যমে নতুন দিগন্ত খুলছে। এখানে প্রযুক্তির মাধ্যমে গবেষণা বাংলাদেশের চা শিল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে এখানে আরও নতুন উদ্ভাবনের সহযোগিতা করবে। আশা করি চীন সরকার বাংলাদেশেও তাদের চা শিল্পের নতুন ধারণা শেয়ার করবে এবং নতুন ভ্যারিয়েন্টের উদ্ভাবনে সহযোগিতায় পাশে থাকবে।
শাবিপ্রবির পলিটিকাল স্টাডিজ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত চাইনিজ কর্ণারের কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মো. সাহাবুল হকের সভাপতিত্বে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশস্থ চায়না দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সিলর লি শাওপিং। অনুষ্ঠানে লি শাওপিং বলেন, বাংলাদেশে চা একটি ঐতিহ্যবাহী পণ্য। দুই দেশের মধ্যে এই খাতে গবেষণা ও উদ্ভাবনের সুযোগ অসীম। এই ধরনের উদ্যোগ সেই পথকে প্রশস্ত করে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শাবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইসমাইল হোসেন, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির মাওলানা খাইরুল হোসেন, শ্রীমঙ্গলের বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য তাহসীন আহমেদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে চীনের চা-এর ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফ্যুসিয়াস ইনস্টিটিউট পরিচালক ইয়াং হুই, প্রকারভেদ ও প্রক্রিয়াকরণ নিয়ে চীনা শিক্ষক জং কিয়ানআন ও চা শিল্প নিয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের শিক্ষক লি ইয়াংসি।
বাংলাদেশের চা শিল্প নিয়ে বক্তব্য রাখেন শাবিপ্রবির ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টি টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতেখার আহমেদ, কর্মসংস্থান ব্যাংকের পরিচালক সাংবাদিক সালাউদ্দিন বাবলু।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন শাবিপ্রবির পলিটিকাল স্টাডিজ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. সৈয়দ আশরাফুর রহমান এবং ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টি টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. ওয়াহিদুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য দেন শাবিপ্রবির পলিটিকাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. দিলারা রহমান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শাবিপ্রবি অধ্যাপক ড. জায়েদা শারমিন, সহকারী অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, চা উৎপাদন ও বিক্রির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গ ও চা শ্রমিক প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, বিশ্বে প্রতিবছর ৬ দশমিক ৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন চা উৎপাদন হয়ে থাকে। এর মধ্যে চীনে ৩ দশমিক ২ মিলিয়ন ও বাংলাদেশে এক লাখ টন উৎপাদন হয়। চীন বর্তমানে প্রযুক্তির সাহায্যে চা উত্তোলন করে থাকে। এর মধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হওয়াতে তা পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে। চায়না ও বাংলাদেশের একাডেমিক, গবেষণা ও বাণিজ্যিক আলোচনার অংশ হিসেবে এই টি সামিট ও প্রদর্শনী দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। বিজ্ঞপ্তি