ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে আসল জয়ী চীন?
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ মে ২০২৫, ৯:৩৯:০০ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : চলতি মাসে যুদ্ধে জড়িয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় যুদ্ধে জড়ায় দুই দেশে। এতে উভয় দেশ নিজেদের জয়ী বলে দাবি করেছে। তবে এ সংঘাতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে চীন। এতে অপ্রত্যাশিত বিজয়ী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে চীনের প্রতিরক্ষা শিল্প। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে চীনা অস্ত্র ব্যবস্থার ব্যবহার এবং এর কথিত সাফল্য বিশ্বব্যাপী আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ যুদ্ধের মাধ্যমে চীনের প্রতিরক্ষা খাতের অপ্রত্যাশিত উত্থান হয়েছে।
সংঘাতের সূচনা :
গত ২২ এপ্রিল ভারত শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হন। এই হামলার জন্য ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং ৭ মে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো’ লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এ অভিযানকে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে উল্লেখ করেছে। এরপর উভয় দেশের মধ্যে ড্রোন, মিসাইল এবং যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে পাল্টাপাল্টি হামলা শুরু হয়।
ভারত তার ফ্রান্স ও রাশিয়ার তৈরি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে। অন্যদিকে এর মোকাবিলায় পাকিস্তান চীনের সঙ্গে যৌথভাবে উৎপাদিত জে-১০ এবং জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে। উভয় পক্ষই দাবি করে তাদের বিমান সীমানা অতিক্রম করেনি এবং দূর থেকে মিসাইল নিক্ষেপ করেছে।
পাকিস্তান দাবি করে, তারা ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। যার মধ্যে ফ্রান্সের তৈরি রাফাল বিমানও ছিল। ভারত এই দাবির বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি, আবার অস্বীকারও করেনি। ভারতীয় বিমানবাহিনীর এয়ার মার্শাল এ কে ভারতি বলেন, যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতি স্বাভাবিক। আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করেছি এবং আমাদের সব পাইলট নিরাপদে ফিরে এসেছে।
চীনা অস্ত্রের প্রভাব :
পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানে চীনা প্রযুক্তির ব্যবহার এই সংঘাতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে আমেরিকান কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে বলা হয়, পাকিস্তান সম্ভবত চীনের তৈরি জে-১০ বিমান ব্যবহার করে ভারতীয় যুদ্ধবিমানের বিরুদ্ধে এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল ছুড়েছে। এই ঘটনাকে কিছু বিশেষজ্ঞ চীনা প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য একটি ‘ডিপসিক মুহূর্ত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এটি মূলত চীনা প্রযুক্তির সাফল্যকে তুলে ধরেছে।
চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র কর্নেল ঝৌ বো বিবিসিকে বলেন, এই সংঘাত চীনা অস্ত্র শিল্পের জন্য একটি বড় বিজ্ঞাপন। এর আগে চীনের কাছে তার অস্ত্র ব্যবস্থা যুদ্ধক্ষেত্রে পরীক্ষা করার সুযোগ ছিল না। তিনি আরও বলেন, এই ঘটনা প্রমাণ করে যে চীনের কিছু অস্ত্র ব্যবস্থা বিশ্বের সেরাদের সমকক্ষ।
চীনের অ্যাভিক চেংডু এয়ারক্রাফট কোম্পানি, যারা জে-১০ যুদ্ধবিমান তৈরি করে, তাদের শেয়ারের মূল্য গত সপ্তাহে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। চীনা সামাজিক মিডিয়ায় জে-১০ এর কথিত সাফল্য নিয়ে উচ্ছ্বাস ও জাতীয়তাবাদী বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে। ইতালির ভেরোনার ইন্টারন্যাশনাল টিম ফর দ্য স্টাডি অব সিকিউরিটির গবেষক কার্লোটা রিনাউদো বলেন, ‘বর্তমানে বাস্তবতার চেয়ে উপলব্ধি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই দৃষ্টিকোণ থেকে চীনই প্রকৃত বিজয়ী।