সুশাসনের সাথে পরিমাপ নিবিড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত : বিভাগীয় কমিশনার
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ মে ২০২৫, ৯:৪৬:০৮ অপরাহ্ন
সিলেটে বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস পালন
স্টাফ রিপোর্টার: সঠিক পরিমাপের গুরুত্ব এবং এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বিস্তারিত কর্মসূচী গ্রহনের মাধ্যমে সিলেটে উদযাপিত হয়েছে ‘বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস’। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সর্বকালেই পরিমাপ সকলের জন্য’। জেলা প্রশাসন ও বিএসটিআই সিলেটের যৌথ আয়োজনে গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী বলেন, পরিমাপ মানুষের জীবনের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পরিমাপের বাইরে কিছু নাই। সুশাসন ও সুবিচারের সাথেও সম্পর্কযুক্ত পরিমাপ। ভোক্তারা যেন প্রতারিত না হয় সেজন্য সঠিক পরিমাপের পণ্য নিশ্চিত করতে হবে। এটি ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, অন্যকে ঠকানোর প্রবৃত্তি যুগ যুগ ধরে ছিলো এবং এটি এখন আরো বেশি বিস্তৃত। এ প্রবণতা থেকে বেরিয়ে না আসতে সবাইকে যার যার আবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতেরও উদ্ধৃতি বিভাগীয় কমিশনার।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদের সভাপতিতে¦ সভায় প্রতিপাদ্যের আলোকে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এর ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আরিফ আহমদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসটিআই সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো মাজাহারুল হক।
সভায় সিলেট বিভাগের বিভিন্ন শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, পণ্যের মান ও পরিমাপে বিশ^বাজারের তুলনায় এখনো অনেক ঘাটতি আছে দেশে। অসৎ ব্যবসায়ীদেও কারণে সৎ ব্যবাসয়ীরাদের ঠিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে। এজন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। তারা বলেন, পণ্যের ওজন পরিমাপ এবং গুণগত মান নিশ্চিতে বিএসটিআই’কে আপোষহীন ভুমিকা পালন করতে হবে। তবে তাদের লোকবল খুবই কম। সিলেটের এক কোটি ৩০ লক্ষ ভোক্তার বিপরীতে বিএসটিআইর জনবল যথেষ্ট নয়। এক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতে সরকারকে তাগিদ দেন বক্তারা।
সভায় বলা হয়, নি¤œমাণের পণ্য ও ওজনে কম দেয়া অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের তৎপরতা বাড়াতে হবে। তথ্য প্রযুক্তি ও ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে বিএসটিআই’র কার্যক্রমকে অটোমেশনের আওতায় আনতে হবে।
সভায় মূল প্রবন্ধে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আরিফ আহাম্মদ ‘সর্বকালেই পরিমাপ সকলের জন্য’ প্রতিপাদ্যের আলোকে পরিমাপ কিভাবে বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থায় সহায়ক ভূমিকা পালন করছে তার ওপর বিশদ আলোচনা করেন।
স্বাগত বক্তব্যে বিএসটিআই সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো মাজাহারুল হক জানান, এ মাসেই বিএসটিআই সিলেট অফিসের ল্যাবরেটরিতে আধুনিক মানের মাইক্রোবায়োলজিক্যাল ল্যাব সংযুক্ত করা হয়েছে। যার ফলে এ অঞ্চলের উৎপাদিত পণ্যের পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষণ সুবিধা ৬৫ শতাংশ থেকে শতভাগে উন্নীত হয়েছে। পূর্বে ২৯টি পণ্যের পূর্ণাঙ্গ সুবিধা থাকলেও এখন ৫০ পণ্যেও পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষণ সুবধিা নিশ্চিত হয়েছে। এছাড়া বিএসটিআই সিলেট অফিসের ল্যাবরেটরিতে ওজন ও ওজন যন্ত্রের ক্যালিব্রেশন সুবিধা সৃষ্টি হয়েছে । এতে এ অঞ্চলের শিল্প প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রপাতিগুলো ঢাকায় বহন করার দুর্দশা লাঘব হবে।
উপপরিচালক জানান, গত অর্থ বছরে সিলেট বিএসটিআই ১০৪টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে। এর বিপরীতে জরিমানা আদায় হয়েছে ১৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
সভায় বক্তব্য রাখেন ফুলকলি’র ডিজিএম জসিম উদ্দিন, লাফার্জ এর কর্মকর্তা মো: শাহনেওয়াজ, বেঙ্গল সিএনজি এন্ড পেট্রোল পাম্পের আশরাফুল ইসলাম, প্রাণ আরএফএল’র সিনিয়র ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম, জেলা ব্রিকস মালিক সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুল আহাদ প্রমুখ।