বিজ্ঞান বর্হিভূত বিভাগ বন্ধ করবে কি শাবি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ মে ২০২৫, ৮:১৪:১০ অপরাহ্ন
তামিম মজিদ:
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সম্প্রতি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বর্হিভূত বিষয় অর্থাৎ সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগুলো বন্ধ করতে চিঠি দিয়েছে। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বহির্ভূত (নন-স্টেম) বিষয় বা বিভাগ বন্ধ করবে কি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, সেই প্রশ্নটি সামনে এসেছে।
শিক্ষকরা বলছেন, একজন শিক্ষার্থীকে প্রকৌশল ডিগ্রি দেওয়ার জন্য বিভিন্ন বিষয় ও কোর্স পড়াতে হয়। সেদিক থেকে বিশেষায়িত অর্থাৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও সামাজিক বিজ্ঞান, কলা অনুষদের বিষয় থাকতে পারে। তবে সেটি বর্তমানে যে পরিমাণ এমন নয়। বরং সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ থাকতে পারে।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবসা প্রশাসন অনুষদভূক্ত ৯টি বিভাগে অনেক শিক্ষক স্থায়ীভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। চাইলেও তাদের সরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯টি বিভাগে ৪২ দশমিক ৯০ শতাংশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বহির্ভূত (নন-স্টেম) বিষয়ে পড়াশোনা করছেন। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে চাইলেও এসব বিভাগ বন্ধ করা সম্ভব নয়। ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই চিঠির বাস্তবায়ন আদৌ সম্ভব নয়।
গত ১৩ মার্চ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত সংশ্লিষ্ট সাধারণ বিষয় (STEM Subject) ছাড়া অন্য কোনো বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। এরই মধ্যে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের বিষয়ের বাইরে অন্য বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান, তাদের শিক্ষা কার্যক্রম নূন্যতম সময়ের মধ্যে সীমিত অথবা বন্ধ করতে হবে।
জানা গেছে, উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণার সুযোগ তৈরির উদ্দেশ্যে ১৯৮৭ সালে দেশের প্রথম বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অর্থনীতি, ইংরেজি, বাংলা, সমাজ বিজ্ঞান, পলিটিক্যাল স্টাডিজ, নৃবিজ্ঞান, লোক প্রশাসন, সমাজকর্ম এবং ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসা প্রশাসন অনুষদের ব্যবসা প্রশাসন বিভাগে ৪২ দশমিক ৯০ শতাংশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বহির্ভূত (নন-স্টেম) বিষয়ে পড়াশোনা করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে সুস্পষ্ট কোনো নির্দশনা নেই। আর এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি ও শিক্ষক কমিয়ে নিয়ে আসাও সম্ভব নয়। একাডেমিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার রাখে। অতএব, মন্ত্রণালয় চিঠি দিলেও সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার তাদের নয়।
জানতে চাইলে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী জালালাবাদকে বলেন, বিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন বিষয় যেমন, ইংরেজি, সমাজ বিজ্ঞান কিংবা বাংলা পড়তে হয়। এজন্য এসব বিষয়েরও প্রয়োজন রয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ে। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের যেসব বিভাগ এখানে রয়েছে, সেগুলো বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই। এসব বিভাগ বন্ধ করাও সম্ভব নয়। প্রয়োজনের প্রেক্ষিতেই এসব বিভাগ খোলা হয়েছে।