ভারতের সঙ্গে ২১ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি বাতিল বাংলাদেশের
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ মে ২০২৫, ৮:২৪:৩৪ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কিছুদিন আগে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডকে (জিআরএসই) বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি অত্যাধুনিক ‘ওশান-গোয়িং টাগ’ বা বিশেষ ধরনের জাহাজ নির্মাণের অর্ডার দিয়েছিল। প্রায় ২১ মিলিয়ন ডলার বা ১৮০ কোটি ভারতীয় রুপির ওই অর্ডার পাওয়ার জিআরএসই’র শেয়ারও যথারীতি বেড়েছিল প্রায় ১০ শতাংশ। তবে এই অর্ডার পাওয়ার বছর খানেকের মাথায় গত বুধবার (২১ মে) সেটি বাতিল করা হয়েছে বলে জিআরএসই’র পক্ষ থেকে ভারতের স্টক এক্সচেঞ্জকে জানানো হয়েছে।
এদিকে, ওই জাহাজের অর্ডার কেন বাতিল করা হলো, তা নিয়ে বাংলাদেশের নৌবাহিনী বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ সরকারের একটি উচ্চপদস্থ সূত্র জানিয়েছে, অর্ডারটি যে বাতিল করা হয়েছে, সেটি তাঁরাও জেনেছেন। তবে এই সিদ্ধান্ত কেন বা কবে নেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে তাঁরা কিছু বলতে পারছেন না।
তবে সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষকেরা ধারণা করছেন, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে নেওয়া বহু সিদ্ধান্ত বা আন্তর্জাতিক অর্ডার যেমন এর আগেও বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকার বাতিল করেছে, গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্সের এই অর্ডার বাতিল করার সিদ্ধান্তও সেই ধারাবাহিকতায় নেওয়া। বাংলাদেশ কেন অর্ডারটি বাতিল করেছে, সে বিষয়ে ভারতীয় সংস্থাটির পক্ষ থেকেও কিছু জানানো হয়নি।
বাংলাদেশ ভারতীয় কোম্পানিটিকে যে ওশান-গোয়িং টাগ নির্মাণের অর্ডার দিয়েছিল, সেটির দৈর্ঘ্য ৬১ মিটার এবং প্রস্থ ১৫.৮ মিটার হওয়ার কথা ছিল। এটির গভীরতা হওয়ার কথা ছিল প্রায় ৭ মিটার। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ‘প্রতিরক্ষা কাঠামো’র সামর্থ্য বাড়ানোই ছিল এই জাহাজ কেনার উদ্দেশ্য। পরিপূর্ণ লোড নিয়ে জাহাজটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৩ নটিক্যাল মাইল গতিবেগে যেতে পারবে বলেও চুক্তিতে উল্লেখ করা ছিল।
বাংলাদেশ সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন ডিরেক্টোরেট জেনারেল অব ডিফেন্স পারচেজের সঙ্গে ভারতের এই জাহাজ নির্মাতা সংস্থাটির মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২০২৪ সালের ১ জুলাই। চুক্তি অনুয়ায়ী জাহাজটি তৈরি করে সর্বোচ্চ ২৪ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ডেলিভারি দেওয়া হবে বলেও একটি শর্ত ছিল, ফলে আগামী বছরের (২০২৬) মাঝামাঝি নাগাদ এটি বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ ছিল সংস্থাটি। কিন্তু চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর বছর না ঘুরতেই পুরো অর্ডারটি এখন বাতিল করা হয়েছে।