মৌলভীবাজারে ওষুধের ডিপোতে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার ২
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ মে ২০২৫, ৫:৫৮:২৬ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: ৪ সদস্যের একটি চক্র, মোটরসাইকেল ব্যবহার করে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় আসা যাওয়া। তালা কেটে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একই স্টাইলে একই ধরনের তিনটি প্রতিষ্ঠানে ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। মৌলভীবাজারে ৩টি ওষুধ কোম্পানির ডিপোতে ডাকাতির ঘটনায় এই চক্রের মূল হোতাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে দেওয়া এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতকে আদালতে নেওয়া হলে ডাকাতির ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন মূল হোতা শামীম আহমেদ (৪৫)। পুলিশ সুত্র জানায়, চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি মৌলভীবাজারের একমি ওষুধ কোম্পানির ডিপোতে প্রথমে ৪৮ হাজার টাকা ও পরবর্তীতে ২৩ ফেব্রুয়ারি বেক্সিমকো কোম্পানির ডিপো থেকে ৬৮ লাখ এবং সবশেষে ১০ মে ওরিয়ন কোম্পানির ডিপো থেকে ৮ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। সব ঘটনাতেই মৌলভীবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
প্রথম ঘটনার পরই মৌলভীবাজার সদর থানা সম্পৃক্তদের চিহ্নিত করতে কাজ শুরু করে। সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আজমল হোসেনের নেতৃত্বে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জসহ এসআই জয়ন্ত সরকার, এসআই হিরণ বিশ্বাস, এসআই উৎপল সাহা, এসআই রানা মিয়া, এএসআই সাইদুর রহমানকে নিয়ে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়।
সিসি ক্যামেরা ফুটেজ, গোপন সোর্স এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত ১৭ মে রাত সাড়ে ৩টার দিকে হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার পশ্চিম ভাদেশ্বর গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে এই চক্রের মূল হোতা শামীম আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে মুকিত মিয়া নামে তার এক সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর ৪ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামি শামীম আহমেদ গত ২২ মে আদালতে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। গ্রেফতারকৃত শামীম হবিগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের মৃত সিরাজ আলীর ছেলে।
পুলিশ আরও জানায়, গ্রেফতারকৃত শামীম’র হেফাজত থেকে লুট করা ১৩ লাখ টাকায় কেনা একটি নোয়া মাইক্রোবাস এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি পালসার মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া তাদের ব্যবহৃত কেডস, ইলেকট্রিক কাটার ও হেক্সাব্লেড জব্দ করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ গাজী মোঃ মাহবুবুর রহমানের বরাত দিয়ে জানায়, টাকা লুটের ঘটনার পর থেকেই সম্পৃক্তদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পুলিশ কাজ শুরু করে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে প্রথমে মুকিত মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ আর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মূলহোতা শামীমকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।’
তিনি আরও জানান, ‘এই চক্রটি সিলেট অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে এমন অপকর্ম করে আসছে। তিন বছর আগে সিলেটের ওসমানীনগর থানা এলাকায় এটিএম বুথ ভেঙে টাকা লুটের ঘটনায় ঢাকা থেকে আসামি শামীমকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আমরা এই চক্রের বাকি সদস্যদেরকে গ্রেফতারে কাজ করছি।’