সিলেটে নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে পার্শ্ববর্তী জনপদ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ মে ২০২৫, ১২:৩০:৩৬ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট: সিলেটে বর্ষ মৌসুম শুরু পর থেকে সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী একটি রাস্তার ওপর নির্মিত সেতু ভেঙে পড়েছে। ভাঙনের ঝুঁকির মুখে রয়েছে সিলেটের বালাগঞ্জের সুলতানপুর-খসরুপুর সড়ক।
শুধু রাস্তা ও বসতবাড়ি নয়, নগরীর দক্ষিণ সুরমার বাবনা পয়েন্ট এলাকায় অবস্থিত যমুনা অয়েলের ডিপো পড়েছে সুরমা নদীর ভাঙনের মুখে। সম্প্রতি ডিপোর উত্তরের দেয়ালঘেঁষে দেড়শ ফুট জায়গা ভেঙে পড়েছে নদীতে। দ্রুত ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ডিপোটি নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর দুই তীরে জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, বালাগঞ্জ ও সিলেট সদরের শতাধিক গ্রামের অবস্থান।
সরেজমিন দুটি নদীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, কারও বসতঘর ভাঙনের মুখে, আবার কারও ঘর বিলীন হয়ে গেছে। কোথাও রাস্তা ও সেতু ভেঙে গেছে। বালাগঞ্জের ফাজিলপুর এলাকায় রাস্তা ও সেতু দেবে যাওয়ায় চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার লোক।
কুশিয়ারায় পানি বাড়ায় ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার উজান গঙ্গাপুর, সুলতানপুর, মানিককোনা, মল্লিকপুরসহ কয়েকটি তীরবর্তী গ্রাম ভাঙনের মুখে রয়েছে। সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে এসব এলাকার একাধিক স্থানে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। জকিগঞ্জে কুশিয়ারার ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে বড়চালিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, গাগলাজুর প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এদিকে সুরমা নদীর তীরবর্তী সিলেট পশ্চিম সদর উপজেলার চানপুর, যোগীরগাঁও, লালারগাঁও, তালুকপাড়া, খালপাড়, মিরেরগাঁও, ফতেহপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে এসব গ্রামের ঘরবাড়ি, ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
সুরমা তীরবর্তী গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা ইউনিয়ন, বাদেপাশা ইউনিয়ন, শরিফগঞ্জ ইউনিয়ন, ভাদেশ্বর ইউনিয়ন ও বুধবারীবাজার ইউনিয়নের অনেক স্থাপনা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশেষ করে বাঘা মাদ্রাসা, এসসি একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আছিরগঞ্জ বাজার, শরিফগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়, মিরগঞ্জ বাজার হুমকির মুখে রয়েছে।
কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী বিয়ানীবাজারের দুবাগ, শেওলা ও কুড়ারবাজার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বসতঘর, হাট-বাজার, চলাচলের রাস্তা ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, সীমান্ত নদীর তীর সংরক্ষণ ও উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় গত বছর চারটি প্যাকেজে ১ দশমিক ৮০০ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কুশিয়ারার কয়েকটি এলাকায় ভাঙনরোধের কাজ চলছে। এছাড়া গত বছর বন্যা-পরববর্তী সমীক্ষার পর ১৩শ কোটি টাকার একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। প্রকল্পটি এখনও অনুমোদন হয়নি।