জুলাই হত্যাকাণ্ডের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ মে ২০২৫, ১০:২২:৫৩ অপরাহ্ন
৯০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল
জালালাবাদ ডেস্ক : রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান হাবিবসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন বিভাগ। এর মধ্য দিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলো।
রোববার (২৫ মে) ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দাখিল করার মধ্য দিয়ে এ বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এর আগে, গত ২০ এপ্রিল এই মামলায় আটজনকে অভিযুক্ত করে ৯০ পৃষ্ঠার একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
প্রসিকিউশন বিভাগ জানিয়েছে, বিচারপতি গোলাম মোর্তোজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চে এটি দাখিল করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ আলম ও মো. আখতারুল ইসলাম, রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল, শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।
এদের মধ্যে শেষের চারজন গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। অন্যরা পলাতক রয়েছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখাঁরপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে গুলি চালায়। এতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। রাষ্ট্রীয় আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা এই অভিযানে সরাসরি অংশ নেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্দোলন দমন করতে আগ্নেয়াস্ত্র, এপিসি কার, হেলিকপ্টার, ড্রোন ও বিপুল পরিমাণ বুলেট ব্যবহার করা হয়। এসময় নিহত হন শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদী হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পলাতক আসামি হাবিবুর রহমানসহ অন্য অভিযুক্তরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে অধীনস্তদের গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। তাদের সহযোগিতা ও নির্দেশেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
পরোয়ানা ছাড়াই সরাসরি গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেলেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর, তদন্তকারী কর্মকর্তারাপরোয়ানা ছাড়াই সরাসরি গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেলেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর, তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
প্রসঙ্গত, প্রসিকিউশনের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৩৩০টি অভিযোগ দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ৩৯টি তদন্ত কার্যক্রম চলমান। তদন্তের প্রাথমিক সত্যতার ভিত্তিতে মিস কেস হয়েছে ২২টি। মিস কেসে সর্বমোট অভিযুক্ত ব্যক্তি ১৪১ জন। এর মধ্যে গ্রেপ্তার রয়েছেন ৫৪ জন, আর ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক রয়েছেন ৮৭ জন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বেসামরিক ব্যক্তি ৭০ জন, পুলিশ সদস্য ৬২ জন, আর সামরিক সদস্য নয়জন।