হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ কেটে মাছ শিকারের অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ মে ২০২৫, ৮:০১:২২ অপরাহ্ন
জামালগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে হাওরে মাছ ধরতে ফসল রক্ষা বাঁধ কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে রাইঙ্গা নদী জলমহালের ইজারাদারের লোকদের বিরুদ্ধে। হাওরের বেড়ি বাঁধ প্রশাসন- পাউবো ও কৃষকদের মতামত না নিয়ে কেউ যেন না কাটতে পারে- সে ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করলেও কোন কর্ণপাত করেনি ওই ইজারাদারের লোকজন। গত কয়েকদিনে একাধিকবার হালির হাওরের পাশে বাঁধ কাটার চেষ্টা করলেও এলাকাবাসীর পাহারায় ব্যর্থ হয়েছেন তারা। তবে রাইঙ্গা নদীর ইজারাদারের লোকজনের হাত থেকে শেষ রক্ষা হয়নি উপজেলার হালির হাওরের গনিয়ার কাড়ার ফসল রক্ষা বেড়ি-বাঁধটি।
স্থানীয় একাধিক কৃষকদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, উপজেলার হালির হাওরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাইঙ্গা নদীর ইজারাদার আক্তার উদ্দিন ও তার ব্যবসায়ী অংশীদার কামাল হোসেন মাছ আহরণে সুবিধা করতে প্রতি বছরই এই বাঁধের মাটি কেটে দেয় তারা। গত বছর এই বাঁধ কেটে দেয়ার কারণে এবার কৃষকদের জমিতে পলি মাটি পড়ে ভরাট হয়ে যায়। এই কারণে গত পৌষ-মাঘ মাসে বোরো ধানের চারা রোপণে তাদের বেগ পেতে হয়েছে।
এ বছরও বৈশাখে কোন রকম তাদের হাওরের ধান কাটার পরপরই প্রশাসনের নিষেধ উপেক্ষা করে হাওরের বাঁধ কাটতে গভীর রাতে একাধিকবার চেষ্টা করে স্থানীয় কৃষকদের বাধায় ব্যর্থ হয় রাইঙ্গা নদীর ইজারার পক্ষের জামালগঞ্জ উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের কামলাবাজ গ্রামের মো. কামাল হোসেন।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে সুযোগ বুঝে ওই কামাল হোসেনের নির্দেশে তার লোকজন হালির হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের গুরুত্বপূর্ণ অংশ গনিয়ার কাড়া বাঁধটি কাটার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে এলাকার লোকজনের কাছে।
এ ব্যাপারে বদরপুর গ্রামের অমিন হোসেন বলেন, আমরা প্রতিবছরই এই বাঁধটি নিয়ে আতংকে থাকি। কারণ হালির হাওরের গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ এটি। এই রাইঙ্গা নদী কামাল হোসেন ইজারা নেওয়ার কারণে তার মাছ আহরণে সুবিধা করতে প্রতি বছরই এই বাঁধটি কেটে দেয়। এবারো তাকে না করার পরও সে রাতের আঁধারে লোকজন দিয়ে বাঁধ কেটেছে। আমরা তাদেরকে হাতেনাতে ধরেছি। প্রশাসনের কাছে দাবি রইলো এটি যেন সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মো. কামাল হোসেন বলেন, সব কিছু অস্বীকার করে বলেন, আমি এই কাজ করিনি। আমাকে ফাঁসানোর জন্য বানোয়াট কথা বলেছে। জলমহালের ইজারাদার আক্তার উদ্দিনের মুঠো ফোনে কয়েকবার কল করে বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বেহেলী ইউনিয়ন পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, বাঁধ কাটার খবর পেয়েছি। সরেজমিনে গিয়ে বাঁধটি কাটা দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী নিয়ে বাঁধের ভাঙা বন্ধ করেছি। পরে স্থানীয়রা জানায় রাইঙ্গা নদীর ইজারাদার কামাল হোসেন এই কাজ করেছে। পরে সকালে কামাল হোসেন আমার বাড়িতে গিয়ে আমাকে অনুনয়-বিনয় করে। তাকে বলে দিয়েছি বাঁধের কোনো সমস্যা হলে এই দায়ভার তোমার।
এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকীন নূর জানান, কাটা বাঁধটি আমরা রিপেয়ার করেছি। আমি একটি কর্মশালায় আছি, এসওকে বলে দিচ্ছি বিষয়টি দ্রুত খোঁজ নিতে।