প্রস্তুত নগরীর পশুর হাট, থাকছে ড্রোন ক্যামেরাও
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ মে ২০২৫, ৫:৩০:২৯ অপরাহ্ন
তামিম মজিদ
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে পুরোপুরি প্রস্তুত সিলেট নগরীর পশুর হাটগুলো। হাটের ইজারাদাররা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। প্রস্তুতির পালা শেষ, এবার শুধু হাটে কোরবানির পশু উঠানোর অপেক্ষায় ইজারাদাররা। আগামী দু’এক দিনের মধ্যেই হাটে কোরবানির পশু উঠতে শুরু করবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাটের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)। অপরাধ ঠেকাতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তার পাশাপাশি থাকছে ড্রোন ক্যামেরাও। ফলে ক্রেতা-বিক্রেতারা নির্বিঘ্নে পশু কেনা বেচা করতে পারবেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। অপরদিকে কোরবানির পশুর হাটে জাল নোট রোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে বলে জানা গেছে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের তথ্য বলছে, এবার পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে নগরীর স্থায়ী পশুর হাট কাজীরবাজারের পাশাপাশি ৬টি অস্থায়ী পশুর হাট বসবে। এই পশুর হাটগুলো হচ্ছে, মাছিমপুর কয়েদীর মাঠ, শাহপরান মাজার গেইট, টিলাগড় পয়েন্ট, ইসলামপুর (মেজরটিলা) বাজার, তেমুখী পয়েন্ট ও মিরাপাড়া আব্দুল লতিফ স্কুল সংলগ্ন মাঠ।
অস্থায়ী পশুর হাটগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, কোরবানির পশুর জন্য তৈরি করা শেড নানা রঙের ত্রিপলে সাজানো হয়েছে। সারিবদ্ধ বাঁশ দিয়ে গরু বাঁধার ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে। ছোট-বড় গরু বিক্রির ইজারা সংগ্রহ করতে তৈরি করা হয়েছে ইজারাদারদের জন্য মঞ্চ। বৃষ্টির ভোগান্তি থেকে ক্রেতা-বিক্রেতাকে স্বস্তি দিতে প্রতিটি হাটেই বাঁশ দিয়ে ছাউনি তৈরি করে উপরে ত্রিপল টানানো হয়েছে।
কবে থেকে গরুর হাট জমতে পারে জানতে চাইলে ইসলামপুর (মেজরটিলা) হাটের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত মো. আবু তাহির বলেন, গ্রামে হাট জমে ঈদের এক সপ্তাহ আগে, কিন্তু শহরের হাট জমে দুই থেকে তিন দিন আগে। এখনো ১০ দিন বাকি, দু’এক দিনের মধ্যে গরু উঠতে শুরু করবে। তখন ক্রেতারা দেখবে, বাজার বুঝবে, তারপর কিনবে। তিনি জানান, ঈদের খুব বেশি আগে শহরের ক্রেতারা কোরবানির পশু কেনেন না। আগে খোলামেলা বাড়ি ছিল, এখন তা নেই। আগে কিনলে গরু-ছাগল রাখার জায়গা কোথায়? তাই শেষ মুহূর্তে জমে গরু-ছাগলের হাট।
টিলাগড় হাটের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত লিলু মিয়া বলেন, আগে যারা আসে তারা মূল ক্রেতা না। বাজার দেখতে অনেকে আসে। যারা আসে তারা দাম শুনে, বলে না। বিক্রি শুরু হলে বোঝা যাবে এবারের গরুর বাজার কেমন যাবে। আমরা তো সবসময় ভালো আশা করি।
এদিকে নগরীর পশুর হাটের কেনা বেচা নির্বিঘ্নে করতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। নগর পুলিশের কমিশনার এ সংক্রান্ত সভায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, নগরীর প্রত্যেকটি পশুর হাটে পুলিশের একটি করে ক্যাম্প বসানো হবে। চাঁদাবাজি রোধে সড়কে একাধিক চেকপোস্ট থাকবে। হাটে ছিনতাই রোধে সাদা পোশাকের একাধিক টিম থাকবে। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশেরও একাধিক টিম থাকবে। এছাড়া অপরাধ ঠেকাতে নগরীর প্রতিটি হাট ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি করা হবে।
জানতে চাইলে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) এডিসি (মিডিয়া) মো. সাইফুল ইসলাম জালালাবাদকে বলেন, যে ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ক্রেতা-বিক্রেতারা নির্বিঘ্নে পশু কেনা বেচা করতে পারবেন, পুলিশ সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কোরবানির পশুর হাটে নগর পুলিশ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, অপরাধ ঠেকাতে হাটে সাদা পোশাকে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করবে। নগরীর সবগুলো হাটেই পুলিশের ক্যাম্প থাকবে। সড়কেও চেক পোস্ট বসানো হবে। ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে প্রতিটি হাট পুলিশের নজরদারিতে থাকবে। এছাড়া যানজট রোধে ট্রাফিক পুলিশের একাধিক টিম কাজ করবে বলেও জানান নগর পুলিশের এই কর্মকর্তা।