জকিগঞ্জে কুশিয়ারার ডাইক ভেঙে প্লাবিত হচ্ছে গ্রামাঞ্চল
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ জুন ২০২৫, ৬:২৮:৪৯ অপরাহ্ন
জকিগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিলেটের জকিগঞ্জে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও ভারতের বরাক নদী দিয়ে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুশিয়ারা নদীর ডাইকের তিনটি জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।
সোমবার রাত আড়াইটার দিকে জকিগঞ্জ সদর ইউপির রারাই গ্রামের ডাইক, ভোররাতের দিকে একই ইউপির বাখরশাল গ্রামের ডাইক ও সকাল ৮টার দিকে খলাছড়া ইউপির লোহারমহল গ্রামের ডাইক ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু হয়েছে। এতে আশপাশের প্রায় ২৫/৩০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া পৌর শহরের নিকটবর্তী কেছরী গ্রামের ডাইকের ওপর দিয়ে শহরে ঢুকছে কুশিয়ারার পানি। মাইজকান্দী গ্রামের ডাইকের অংশ ধসে পড়েছে নদীতে।
জকিগঞ্জ ইউপির ছবড়িয়া, সেনাপতিরচক, সুলতানপুর ইউপির ইছাপুর, খলাছড়া ইউপির একাধিক স্থান, বারঠাকুরী ইউপির পিল্লাকান্দী, আমলশীদসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক জায়গায় ডাইকের ওপর দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে এবং স্থানীয়রা বালুভর্তি বস্তা ফেলে ডাইক রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, জকিগঞ্জ সদর ইউপির রারাই গ্রামের প্রায় ১শ ফুট বাঁধ, বাখরশাল গ্রামে প্রায় ৪০/৫০ ফুট বাঁধ ও খলাছড়া ইউপির লোহারমহল এলাকায় প্রায় ৩০/৪০ ফুট বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে ওই এলাকা প্লাবিত হয়েছে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদসহ বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন গ্রামবাসী।
এদিকে, ভারতের উজানের ঢলে আশঙ্কাজনকভাবে কুশিয়ারার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তীরবর্তী এলাকার লোকজনের বসতঘরে ইতোমধ্যে পানি ঢুকে গেছে। রোববার রাত থেকে তীরবর্তী এলাকার লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বেরিয়েছেন। উপজেলা প্রশাসন বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কন্ট্রোল রুম চালু করেছে।
নদীর তীরবর্তী এলাকার একাধিকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় জকিগঞ্জে বারবার বন্যা হচ্ছে। রোববার থেকে নদীর পানি বৃদ্ধি হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কেউ সেদিকে লক্ষ্য রাখছেন না। বারবার বস্তার চাহিদা জানানো হলেও বস্তা পাওয়া যাচ্ছেনা। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
জানতে চাইলে জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান, প্রশাসন সার্বক্ষনিক মনিটরিং করছে। বন্যা কবলিত এলাকার লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনার প্রস্তুতি চলছে। আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। তবে কতটি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সেটা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেন নি ইউএনও। তবে প্রশাসন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান।