কমলগঞ্জে যে সড়কে লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ জুন ২০২৫, ৭:৫৪:২০ অপরাহ্ন
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রাম যোগীবিল, চেরারপার, লাংলিয়া, শিবপুর ও আলীনগর চা-বাগান। এ গ্রামগুলোতে প্রায় ৫ থেকে ৭ হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামবাসীর একমাত্র ভোগান্তি দুই কিলোমিটার কাচা সড়ক। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও এই সড়কে লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। বিকল্প সড়ক ব্যবস্থা না থাকায় কাচা সড়কটি গ্রামবাসীর জীবনযাত্রাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। স্বাধীনতার পর থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ সড়কের উন্নয়নে সুদৃষ্টি দেয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন, পর্যায়ক্রমে সড়ক পাকাকরণের কাজ করা হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের যোগীবিল গ্রামের কনুবাবুর বাড়ি হতে লাংলিয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র পর্যন্ত ও রাস্তার মধ্যবর্তী থেকে আদমপুর বাজার এর প্রধান সড়ক পর্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ কাচা রাস্তা যেন উন্নয়নের আলো থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন। গ্রামের দুই কিলোমিটার আঁকাবাঁকা সড়কটির বেহাল দশা। বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি জমে হাঁটুসমান কাদা ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। আবার কোথাও কোথাও বর্ষার পানিতে মাটি ধুয়ে চলে গেছে সড়কের পাশের পুকুর ও ডোবায়। যাতায়াতের বিকল্প কোনো সড়ক না থাকায় গ্রামবাসীরা এই সড়কের উপর নির্ভরশীল।
গ্রামবাসীরা জানায়, এ সড়কে প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত। একটু বৃষ্টিতেই সড়কটি কাদা-পানিতে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেল চলাচলও কঠিন হয়ে পড়ে। হেঁটে চলতেও ভোগান্তির শিকার হন বয়োবৃদ্ধ ও স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। জরুরি রোগী পরিবহন, উৎপাদিত শাক-সবজি পরিবহনে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। শুধু তাই নয়, অন্য গ্রাম বা শহর থেকে বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রী দেখতে আসলে গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও রাস্তার বেহাল দশা দেখে বিয়ে ভেঙে দিয়ে চলে যায়। সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পড়ে গিয়ে হাত-মাজা ভাঙাসহ গাড়ির চাকা ভাঙার মতো ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীরাও বিদ্যালয়ে যেতে অনীহা প্রকাশ করে বলে জানান গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীর অভিযোগ, স্বাধীনতার পর থেকে জনপ্রতিনিধিরা পাকা সড়কের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার রাস্তা মাপামাপি করলেও কোনো উন্নয়ন কাজ হয়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, আমি নিজের উদ্যোগে অনেকবার আবেদন করেছি। অথচ প্রশাসনের কেউ এটা গুরুত্ব দিয়ে দেখে না। মানুষের এই ভোগান্তি যেন নিয়তি হয়ে গেছে।
সড়কটি পাকাকরণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্জনা বেগম হেনা। তিনি বলেন, আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। তারা রাস্তা পাকাকরণের আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছেন, রাস্তা পাকা হবে, তবে একটু সময় লাগবে। আমার গ্রামের মানুষজন খুব কষ্টে রয়েছে। দ্রুত রাস্তাটি পাকা করা প্রয়োজন।
কমলগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী (চঃ দাঃ) রাকিবুল ইসলাম বলেন, রাস্তাটা কাচা বা খারাপ অবস্থায় আছে সেটা আমাদের জানা নাই। তবে এ বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর জানান, সড়কের বেহাল অবস্থার কথা কেউ জানায়নি। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।