গোয়ালাবাজার ইউনিয়নে চেয়ারম্যান দায়িত্বে না থাকায় ভোগান্তি
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জুন ২০২৫, ৮:৫৬:২৭ অপরাহ্ন
মো. মুহিব হাসান, ওসমানীনগর:
ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের বিষয়টি প্রশাসনের মতামতের অপেক্ষমান থাকায় প্রায় এক মাস ধরে নাগরিক সেবা পেতে নাগরিকরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। চলতি জুন মাসে আর্থিক বছরের শুরু হওয়ায় বাজারের ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স নিতে এবং নিয়মিত সেবা পেতে নাগরিকরা সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন। অন্যদিকে পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান পদ নিয়েও সদস্যদের মধ্যে ৬জন করে দু’টি ভাগে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, গেল নির্বাচনে গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি পীর মোঃ মজনু মিয়া। চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি অসুস্থতাজনিত কারণে তিনি ছুটিতে গেলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান ৯নং ওয়ার্ড সদস্য উপজেলা বিএনপির মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক শাহিন মিয়া। গত ৩০ এপ্রিল চেয়ারম্যান পরিষদে যোগদান করলে ওই দিন রাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে মৌখিকভাবে জানান, তিনি যেন কোন ধরণের কাগজপত্রে স্বাক্ষর না করেন। ১ মে চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব পালন করতে না দেয়ার জন্য সাধারণ নাগরিকের ব্যানারে গোয়ালাবাজারের সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করেন পীর মজনু মিয়া। এ ব্যাপারে মতামত পাওয়ার জন্য আবেদনটি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়।
এদিকে, গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যানের তালিকায় রয়েছেন ইউপি সদস্য শাহিন আহমদ, বেলাল আহমদ, আব্দুল কাইয়ুম ও রোকেয়া বেগম। চেয়ারম্যান দায়িত্ব থেকে বিরত থাকায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কে হবেন, এ নিয়ে ইউপি সদস্যদের দু’টি পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য একটি পক্ষ শাহিন মিয়ার পক্ষে এবং আরেকটি পক্ষ আব্দুল কাইয়ুমের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন। দুইটি আবেদনেই ৬জন করে ইউপি সদস্যের স্বাক্ষর থাকায় বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গত রোববার তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাশরুফা তাসলিমকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন অফিসে তদন্ত টিম ওয়ার্ড সদস্যদের নিয়ে আলোচনায় বসেন এবং তাদের মতামত নেন।
গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মারুতী নন্দন ধাম বলেন, নাগরিক সেবা নিতে প্রতিনিয়ত অনেক লোক পরিষদে আসেন। কিন্তু চেয়ারম্যান পদে দায়িত্বরত না থাকায় আমরা সেবা দিতে পারছিনা।
গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পীর মোঃ মজনু মিয়া বলেন, আমি চিকিৎসার জন্য ১৩ জানুয়ারি থেকে তিন মাসের ছুটিতে ছিলাম। ৩০ এপ্রিল নির্ধারিত ছুটি থেকে ১৪ দিন বেশি ছুটি কাটিয়ে পরিষদে যোগদান করি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে দাপ্তরিক কাগজপত্রে স্বাক্ষর থেকে বিরত থাকতে মৌখিকভাবে বলেছেন।
ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদের বিষয়টি সিদ্ধান্তের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্যানেল চেয়ারম্যান সম্পর্কিত জটিলতার তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে, প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।